লোহিত সাগর সংকটে মধ্যপ্রাচ্যের ব্যবসায় নেমেছে ধস। সাগরপাড়ের সব দেশের অর্থনীতি এখন সংকুচিত। এরই মধ্যে হুথি আক্রমণে সুয়েজ খাল দিয়ে জাহাজ বন্ধের প্রভাব পড়েছে বেশ। সংঘাত বাড়লে দেশগুলোর অর্থনীতি ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো নাজুক হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। যার প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতিতেও। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল যুদ্ধের আগুন এখন পোড়াচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিটি দেশকে। এতে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘাঁ লোহিত সাগরে হুথি আক্রমণ, যা ঠেকাতে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে পশ্চিমারা। আর সেই ডামাডোলে প্রতিনিয়ত সঙ্কুচিত হচ্ছে অর্থনীতি। হিসাব-নিকাশ বলছে, যুদ্ধ যে কারণেই হোক, সেটার বলি হচ্ছে হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। সাড়ে তিন মাসের এই সংঘাতে এরই মধ্যে লোহিত সাগর দিয়ে পণ্য পরিবহন কমেছে ৩০ শতাংশ।
আর সেই চাপ সামাল দেয়ার সক্ষমতা নেই পানামা খালের। ফলে উত্তমাশা অন্তরীপ হয়ে জাহাজীকরণের ব্যয় বেড়েছে ৩১০ শতাংশ। অর্থনৈতিক আঘাত এসেছে সামুদ্রিক মাছ সংগ্রহ, খামার, খনি, টোল আদায়, পর্যটন, জ্বালানি, কারখানা, শ্রমিকসহ কয়েক শত উৎপাদনশীল খাতে। বন্ধ হওয়ার পথে ইরিত্রিয়া থেকে উত্তোলিত খনিজ মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়া। সুদানের বন্দর ব্যবহার করে কমেছে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম।
ফলে দেশ দুটি রয়েছে চরম সংকটে। লোহিত সাগরের কারণে সংকটে পড়েছে মিশরও। এরই মধ্যে এ পথ থেকে বছর ব্যবধানে টোল আদায় কমেছে ৪০ শতাংশ।
ফলে দেশটির রিজার্ভ নেমেছে ১৬ বিলিয়নে, যা দিয়ে দুই মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। তাই সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দারস্থ হচ্ছে কায়রো। পর্যটন নির্ভর জর্ডানেও বিদেশি পর্যটক কমেছে ৫৪ শতাংশ। যে ফিলিস্তিন আর ইসরায়েলকে নিয়ে এত ঝামেলা সেই ইসরায়েলি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের আয় এখন একপ্রকার নেই বললেই চলে। দেশটির জিডিপিতে ৫ ভাগের ১ ভাগ অবদান রাখা এই খাতের বিনিয়োগ চলে যাচ্ছে ইউরোপে।
বেকার হয়ে পড়েছেন ইসরায়েলে কাজ করা পশ্চিম তীরের ২ লাখ শ্রমিক। বন্ধ সব ধরনের সরকারি সেবা। খেলাপি হওয়ার পথে বেশিরভাগ ব্যাংক ঋণ। যুদ্ধের বলি হচ্ছে লেবাননও। যার প্রভাবে দেশটির ৭০ শতাংশ অর্থনীতিতে আঘাত আসার শঙ্কায় বিশ্লেষকরা।