পূর্ব এশিয়ার দুই দেশ ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড থেকে সাধারণত বেশিরভাগ চাল আমদানি করে থাকে বাংলাদেশ। এই দুই দেশেই চালের দাম কমেছে। তবে প্রতিবেশী দেশ ভারতের রপ্তানি চালের দাম বেশ কিছুটা বেড়েছে। বাজার বিশ্লেষণের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সপ্তাহ খানিক আগেই ভিয়েতনামের ৫ শতাংশ ভাঙা চালের বাজার দর ছিল প্রতি টনে ৬৫৩ ডলার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে তা যথেষ্ট কমে প্রতি টনে দাঁড়িয়েছে ৬৩০ ডলারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়েও উদ্বৃত্ত থাকা ও আগামী মার্চে ধান সংগ্রহ মৌসুম শুরু হতে যাওয়ার কারণে মেকং বদ্বীপ অঞ্চলে চালের দাম পড়েছে। ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটির এক চাল রপ্তানিকারক রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে কেনাবেচা একটু ধীর গতিতে চলছে। কারণ ক্রেতারা চালের দাম আরও একটু পড়ার অপেক্ষা করছেন। কারণ, তাদের অনুমান আসন্ন শীত-বসন্ত মৌসুমে ধান সংগ্রহ চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি হবে।’ ভিয়েতনামে ব্যাপক কমলেও থাইল্যান্ডে চালের দাম তুলনামূলক অনেক কম কমেছে। এক সপ্তাহ আগে, দেশটির বাজারে ৫ শতাংশ ভাঙা চালের বাজার দর ছিল প্রতি টনে ৬৬৫ ডলার। তবে চলতি সপ্তাহে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬৬৩ ডলারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের বিপরীতে থাই মুদ্রা বাথের মূল্য কমার কারণে চালের দাম কিছুটা কমেছে। অপরদিকে, ভারতের বাজারে আধা সিদ্ধ ৫ শতাংশ ভাঙা চালের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে দেশটির বাজারে এ ধরনের চালের দাম ছিল ৫২৫ থেকে ৫৩৫ ডলারের মধ্যে। কিন্তু সপ্তাহ পেরোতেই সেই দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩৩ থেকে ৫৪২ ডলারে। ভারতের মতো বাংলাদেশের বাজারেও চালের দাম বেড়েছে। চালের দাম বেড়ে যাওয়াকে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘দুরভিসন্ধিমূলকভাবে কোনো জিনিস মজুত করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’ প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পর সরকারও নড়েচড়ে বসেছে। খাদ্যসচিব ইসমাইল হোসেন বলেছেন, চালের মূল্য বৃদ্ধির মধ্যে বাজারে সরবরাহের কোনো সংকট নেই। তারপরও বাজার নিয়ন্ত্রণে না এলে বিনা শুল্কে চাল আমদানির সুযোগ দেওয়া হবে বলে মজুতদারদের প্রতি হুমকি দিয়েছেন তিনি। এই অবস্থায় বাংলাদেশের চাল আমদানির বড় দুই উৎস দেশে চালের দাম কমার বিষয়টি আপাতদৃষ্টিতে সরকারের জন্য সুবিধাই বয়ে আনবে।