বাজারে রিয়েলমি সি-ফিফটি ফাইভ মডেলের বৈধ হ্যান্ডসেটের বর্তমান দাম ১৯ হাজার ৫০০ টাকা। বিপরীতে একই মডেলের আনঅফিশিয়াল ফোনটি পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে ১৪ হাজার টাকায়। বৈধ ও চোরাইপথে আসা ফোনের দামের পার্থক্যও বিশাল থাকার কারণ হচ্ছে, দেশে হ্যান্ডসেট আমদানিতে শুল্কহার ৫৭ শতাংশ আর উৎপাদনে দিতে হয় প্রায় ১৬ থেকে ১৮ শতাংশ। এ বিষয়ে এক মোবাইল দোকানি বলেন, ‘দিনশেষে আমরা সব দিক দিয়েই চাপের মুখে আছি। এখন এক্সেসরিজও তেমন একটা বিক্রি হয় না। দেশের বাজারে যদি আনঅফিশিয়াল ফোন বিক্রি একটি নিয়মের মধ্যে এনে পুরোপুরিভাবে বন্ধ করা যায়, তাহলে আমাদের জন্য খুবই ভালো হবে।’ এমন প্রেক্ষাপটে জুলাইয়ে দেশে চালু হচ্ছে এনইআইআর বা নতুন হ্যান্ডসেট নিবন্ধন কার্যক্রম। সে ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে : অবৈধ ফোনসেট বন্ধ হলে দেশীয় ফোনসেটের দাম কি কমবে? কারণ, হ্যান্ডসেট নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিয়েও উদ্বেগে সাধারণ মানুষ। এমন উদ্বেগ প্রকাশ করে একজন বলেন, ‘আমরা চাই অফিশিয়াল ফোনসেটের দাম কিছুটা কমানো হোক। যাতে আমরা সবাই স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারি।’ আরেকজন বলেন, সরকার যদি সহজ প্রক্রিয়ায় হ্যান্ডসেট নিবন্ধন করে দেয় তাহলে সেটি মানুষের জন্য খুব সুবিধা হবে। হ্যান্ডসেট উৎপাদকরা বলছেন, গ্রে মার্কেট থেকে ক্রেতাদের ফেরাতে মডেলভেদে প্রতিটি হ্যান্ডসেটের দাম কমানো হতে পারে ১ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। শুধু তা-ই নয়; কেনার সময় হ্যান্ডসেটের বৈধতা যাচাই এবং নিবন্ধন করে দেবে বিক্রয় প্রতিনিধিরাই। বিদেশ থেকে আনা হ্যান্ডসেটও নিবন্ধন করা যাবে যে কোনো শোরুমেই। এ প্রসঙ্গে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেসবাহ উদ্দিন বলেন, যে কোনো মোবাইল ফোন বিক্রেতা বা দোকানি গ্রাহককে হ্যান্ডসেট নিবন্ধন করতে পূর্ণাঙ্গ সহায়তা করবেন। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ফি-ও দিতে হবে না। আমাদের সঙ্গে গ্রে মার্কেটের অবৈধ ফোনের গ্যাপ ২০ শতাংশ। আশা করি, আমরা এটি অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারব। এর সঙ্গে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নির্দেশনায় হ্যান্ডসেট নিবন্ধনে গ্রাহকদের সহযোগিতা দেবে মোবাইল অপারেটরদের গ্রাহক সেবা কেন্দ্রও। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘কেউ যদি সেকেন্ডহ্যান্ড ফোন বা ১ বছর ব্যবহার করা ফোন কিনে থাকেন, সেগুলোও নিবন্ধনের সিস্টেম থাকবে। এ কারণে আমরা সব নিয়ে এই কার্যক্রম পরিচালনা করছি। যাতে হুট করে দেশের নাগরিক বা গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত না হন।’ প্রসঙ্গত, বর্তমানে দেশে মোবাইল ফোনের বার্ষিক চাহিদা প্রায় সাড়ে ৩ কোটি, যা পূরণে গড়ে উঠেছে ১৭টি হ্যান্ডসেট সংযোজন কারখানা।