প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কিশোরগঞ্জের হাওর। দিগন্ত বিস্তৃত আকাশ, মেঘ এবং হাওরের জলরাশি যে কাউকে রোমাঞ্চিত করবে। প্রতি বছর পর্যটকরা মিঠামইন অষ্টগ্রাম ও ইটনা হাওরের সৌন্দর্য দেখতে আসেন। এবার হাওরের সৌন্দর্যের সঙ্গে দেখা মিলবে অভিজাত এক রিসোর্টের। মিঠামইন উপজেলার আগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে ৩০ একর জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে এই রিসোর্ট। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নাম দেওয়া হয়েছে প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট। রিসোর্টে ১০টি কটেজ রয়েছে। ৪০টি পরিবার একসঙ্গে থাকতে পারবেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এতদিন কিশোরগঞ্জ শহরে থেকেই হাওর ঘুরতে হতো ভ্রমণপিপাসুদের। দিনে গিয়ে আবার দিনে ফিরতে হতো। পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা ছিল না।
এসব কথা মাথায় রেখে মিঠামইন উপজেলার আগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে ৩০ একর জায়গায় দ্বীপের মতো গড়ে তোলা হয়েছে প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট।রিসোর্টটিতে রেস্টুরেন্ট, পার্টি সেন্টার ও শিশুদের জন্য খেলার জোন করা হয়েছে। ওপর থেকে হাওরের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য বানানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। বিশাল আয়তনের পুকুরে রাখা হয়েছে বোট। বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা লাগানো হয়েছে রিসোর্টের চারপাশে। এসব কিছু নির্মাণ করা হয়েছে আট মাসে।কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাওরে পর্যটকদের সুবিধার জন্য এই রিসোর্ট নির্মাণ করা হয়েছে। আগে বর্ষাকালে হাজার হাজার পর্যটক হাওরের মাঝ দিয়ে অল ওয়েদার সড়ক দেখতে এখানে আসত। কিন্তু পর্যটকদের জন্য রাত্রিযাপনের কোনো সুযোগ-সুবিধা ছিল না। অনেকেই সকালে এসে সন্ধ্যায়ই গন্তব্যে চলে যেতেন। পর্যটকরা এখানে থাকতে পারবেন। বুকিং নেওয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে রিসোর্টের ভাড়া নির্ধারণ হয়ে গেছে।তবে ভাড়া নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। অনেকেই বলছেন, একদিনের জন্য ভাড়ার যে মূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে তা মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। অভিজাত পরিবারগুলোর পক্ষেই কেবল রিসোর্টে রাত্রিযাপন সম্ভব হবে। মধ্যবিত্তদের বিষয়টি মাথায় রাখা হয়নি।রিসোর্ট কর্তৃপক্ষর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে রিসোর্টে একরাত থাকার জন্য সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় হাজার টাকা। সর্বোচ্চ ভাড়া ২৮ হাজার টাকা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলা কিশোরগঞ্জের ‘হাওরের বিস্ময়’ হিসেবে পরিচিত ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম অল-ওয়েদার সড়কের মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুরে দক্ষিণের হাওরে এর অবস্থান। স্থানীয় বাসিন্দা ডা. এ বি এম শাহরিয়ার তার হাওরের পৈতৃক সম্পত্তির ৩০ একর জায়গায় গড়ে তুলছেন এই প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট।দেশের বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের এলাকায় এই রিসোর্ট নির্মাণ হওয়ায় এর মালিক রিসোর্টের নামকরণ করেছেন ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’। সেখানে বিশাল একটি পুকুর আছে। পুকুরের চারদিকে গড়ে তোলা হয়েছে রিসোর্টটি। পুকুরের উত্তর পাশে রেস্টুরেন্ট আর দক্ষিণ পাশে গড়ে তোলা হয়েছে কটেজগুলো।