ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিবিএসের শ্রমশক্তি জরিপ

কৃষিতে আসছেন শিক্ষিত তরুণরা

বেকারত্ব কমেছে, বেশি কর্মসংস্থান কৃষিতে
কৃষিতে আসছেন শিক্ষিত তরুণরা

বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই তরুণ। এ দেশের কর্মসংস্থানেও তারুণ্যের ভূমিকা অসামান্য। স্বাধীনতার পর প্রায় সব খাতেই এগিয়েছে দেশ, বাড়ছে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির গতিও। তবে শিক্ষার হার বাড়লেও বাড়ছে না কর্মসংস্থানের। প্রতিবছর নতুন নতুন মুখ যুক্ত হচ্ছে বেকারত্বের ঘরে। বর্তমান তরুণসমাজের বড় অংশই বেকার, অনিশ্চিত জীবনের পথে। কোনো দেশের জনশক্তির তুলনায় কর্মসংস্থানের স্বল্পতার ফলে সৃষ্ট সমস্যাই বেকার সমস্যা। বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের পথে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, বেকার সমস্যা এর মধ্যে অন্যতম। কৃষি খাতে কর্মে নিয়োজিত জনসংখ্যা কমেছে চার লাখ ৬০ হাজার। তবে কৃষি খাতে কমলেও সার্বিকভাবে এখনো এই খাতে কর্মে নিয়োজিত মানুষের সংখ্যা বেশি। গত ১০ বছরে কৃষি মজুরি প্রায় ৮ গুণ বেড়েছে। হাঁস-মুরগি পালন, গরুর খামার বা মাছের খামার করে ভাগ্য বদলে যাওয়ার গল্প বাংলাদেশে এখন আর নতুন কোনো ঘটনা নয়। কৃষিনির্ভর এই দেশের কৃষক ও খামারি পর্যায়ে চালু হয়েছে নতুন মেরূকরণে হেঁটে চলার গল্প। একসময় গ্রামাঞ্চলে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালনই ছিল কৃষকের বাড়তি আয়ের উৎস।

পর্যায়ক্রমে পোলট্রি সেক্টরে এসেছে ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগির পালন। গ্রামীণ বেকার যুবক ও নারীরা অনেকেই ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগির খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। সময় বদলেছে। কালের পালাবদলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষিত বেকার যুবক ও নারীরা হাঁস, মুরগির বিকল্প হিসেবে বেছে নিচ্ছেন বিকল্প প্রজাতির পাখির খামার। বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় খাত কৃষি। ব্যাপক সম্ভাবনার সঞ্চার হওয়ায় বর্তমানে এই খাতে ঝুঁকছে শিক্ষিত বেকার যুবকরাও। বাংলাদেশ কৃষি নির্ভরশীল দেশ হওয়ায় মোট জনগণের একটি বড় অংশ জীবনধারণের জন্য কৃষির ওপর নির্ভর করে। তবে ধান, গম, পাট ও চা দেশের প্রধান অর্থকরী ফসল হলেও এর পাশাপাশি টমেটো, সরিষা ও সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেও স্বাবলম্বী হচ্ছেন যুবকরা।

গত বছর দেশে বেকারের সংখ্যা কমেছে। আগের তুলনায় এক বছরে বেকারত্ব কমছে ০.১৭ শতাংশ। তবে ২০২৩ সালের শেষ তিন মাসে দেশে বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়েছে। আর গত বছরের ডিসেম্বরে কৃষি খাতে সবচেয়ে বেশি ৩ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার নারী-পুরুষ কাজ করেন। শিল্পে এ সংখ্যা ১ কোটি ২৪ লাখ ৯০ হাজার আর সেবা খাতে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৪০ হাজার। সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপে উঠে এসেছে এ তথ্য। লাখ লাখ শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা এখন বিজ্ঞানভিত্তিক উন্নত কৃষি চাষাবাদে নিজেদের সম্পৃক্ত করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এবং বহু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছেন।

বিবিএসের জরিপ অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে দেশের শ্রমশক্তি আছেন ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৬০ হাজার নারী-পুরুষ। এর মধ্যে পুরুষ ৪ কোটি ৮০ লাখ ১০ হাজার এবং নারী ২ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার। এর মধ্যে ডিসেম্বর শেষে দেশে ৭ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার নারী-পুরুষ জরিপের সময়কালের আগের সাত দিনে ১ ঘণ্টা মজুরির বিনিময়ে কাজ করেছেন। এর মধ্যে পুরুষ ৪ কোটি ৬৪ লাখ ৪০ হাজার এবং নারী ২ কোটি ৪৬ লাখ ৭০ হাজার। বিবিএসের হিসাবে, গত ডিসেম্বর শেষে কৃষি খাতে সবচেয়ে বেশি ৩ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার নারী-পুরুষ কাজ করেন। শিল্পে এ সংখ্যা ১ কোটি ২৪ লাখ ৯০ হাজার আর সেবা খাতে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৪০ হাজার। গত বছর দেশে বেড়েছে শ্রমশক্তি। ২০২২ সালের তুলনায় গত বছর দেশের শ্রমশক্তি ৪ লাখ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার নারী-পুরুষে। আর সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান বেড়েছে সেবা খাতে। সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের পথে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, বেকার সমস্যা এর মধ্যে অন্যতম। বেকারত্ব একটি সামাজিক ব্যাধি অথবা সংকট। দেশের প্রচলিত মজুরিতে মানুষের কাজ করার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যখন তাদের পর্যাপ্ত সুযোগ থাকে না, সেই পরিস্থিতিকে বেকারত্ব বলে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) একটি প্রতিবেদনে বলছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলো থেকে বের হওয়া শিক্ষার্থীদের ৬৬ শতাংশই বেকার, অর্থাৎ ৩ ভাগের ২ ভাগই বেকার থাকছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত