বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের দাম ব্যাপক কমেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সূচকে দেখা গেছে, বিদায়ি জানুয়ারি মাসে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন খাবারের গড় দাম অনেক কমেছে, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যের মূল্য পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এফএও সূচক তৈরি করা হয়। গত জানুয়ারিতে এই সূচক ছিল প্রায় ১১৮ পয়েন্ট, যা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর সবচেয়ে কম। আগের মাস ডিসেম্বরে এই সূচক ছিল ১১৯ দশমিক ১ পয়েন্ট। মাসিক হালনাগাদ রিপোর্টে এফএও জানিয়েছে, সদ্য সমাপ্ত জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম ব্যাপকভাবে নিম্নমুখী হয়েছে। দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলোতে ফসলটির সংগ্রহ বেড়েছে। তাতে বিশ্ববাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ নিয়ে রপ্তানিকারকদের মধ্যে তুমুল প্রতিযোগিতা চলছে। ফলে ভোগ্যপণ্যটির বড় দরপতন ঘটেছে। এফএও জানায়, আলোচ্য মাসে ভুট্টাও ব্যাপক দর হারিয়েছে। সম্প্রতি বিশ্বের বৃহৎ উৎপাদক যুক্তরাষ্ট্র ও আর্জেন্টিনায় ফসলটির সংগ্রহ শুরু হয়েছে।
ফলে বৈশ্বিক বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। এতে খাদ্যপণ্যটির মূল্য হ্রাস পেয়েছে। সংস্থাটি জানায়, গত জানুয়ারিতে সারা বিশ্বে মাংসের দাম আরও কমেছে। এ নিয়ে টানা ৭ মাস খাদ্যপণ্যটির দর কমল। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক দেশগুলো থেকে সরবরাহ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি ও শূকরের মাংসের দরে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। আরেক প্রতিবেদনে এফএও জানিয়েছে, ২০২৩ সালে বিশ্বে ২ দশমিক ৮৩৬ বিলিয়ন টন দানাশস্য (ধান, গম, ভুট্টা ইত্যাদি) উৎপাদন হয়েছে, যা এ যাবৎকালের প্রায় সর্বোচ্চ। এটি ২০২২ সালের চেয়ে ১ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। এর জেরে আলোচিত মাসে পণ্যটির দাম কমেছে। আলোচ্য বছরে মোট শস্য উৎপাদিত হয়েছে ১ দশমিক ৫২৩ বিলিয়ন টন। ইতিহাসে যা সবচেয়ে বেশি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিদায়ি জানুয়ারিতে পণ্যটির দর নিম্নগামী হয়েছে।
সদ্যবিদায়ি জানুয়ারি মাসে বিশ্বে খাদ্য মূল্য সূচক কমেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। গত বছরের অব্যাহত প্রবণতা মেনেই এ বছরও মূল্য সূচক কমেছে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। এফএও জানায়, তাদের খাদ্য মূল্য সূচক বিশ্ববাজারে বিভিন্ন খাদ্য পণ্যের দামের মাসিক পরিবর্তন পরিমাপ করে। সে অনুযায়ী জানুয়ারিতে খাদ্য মূল্য সূচক দাঁড়িয়েছে ১১৮ পয়েন্টে, যা ডিসেম্বরের তুলনায় ১ শতাংশ এবং গত বছরের তুলনায় ১০.৪ শতাংশ কম। গম ও ভুট্টার দাম কমায় খাদ্য মূল্য কমেছে উল্লেখ করে সংস্থাটি জানায়, সরবরাহকারী দেশগুলোর মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে বিশ্বে গমের রফতানি মূল্য কমায় এফএওয়ের সিরিয়াল মূল্য সূচক আগের মাসের তুলনায় ২.২ শতাংশ কমেছে। এছাড়া ভুটার দামও কমেছে। এদিকে গত সাতমাস ধরে মাংসের মূল্য সূচকও অব্যাহতভাবে কমছে। গত ডিসেম্বরের তুলনায় এ হার ১.৪ শতাংশ কমেছে। তবে একই সময়ে চিনির মূল্য বেড়েছে বলে এফএও জানিয়েছে। আগের মাসের তুলনায় জানুয়ারিতে চিনির মূল্য সূচক ০.৮ শতাংশ বেড়েছে।