ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মতি মহল

বাটার চিকেন নিয়ে দুই পরিবারে লড়াই

বাটার চিকেন নিয়ে দুই পরিবারে লড়াই

একদিন দোকানে এলেন এক বাঙালি খদ্দের। চিকেনের অর্ডার করলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে মাথায় বুদ্ধি খেলে যায় গুজরালের। সোজা রান্নাঘরে গিয়ে শেফকে নতুন করে চিকেন তৈরির হুকুম দেন তিনি। ওই সময় নতুন এক রেসিপি আবিষ্কার করেন গুজরাল। মুরগির মাংসকে টমেটোর ঝোলে চুবিয়ে হালকা ভেজে তার ওপর মাখন ছড়িয়ে দেন তিনি। পাশাপাশি, মাখন দিয়েই ঝোল তৈরি করেন গুজরাল। ঝালের বদলে ওই ঝোলকে মিষ্টি করে তোলা হয়। আর এভাবেই আত্মপ্রকাশ করে বাটার চিকেন। তৈরি হওয়ার তিন বছরের মধ্যেই দারুণ জনপ্রিয় হয়ে যায় মোতি মহলের এই খাবার। পাকিস্তানের পেশোয়ার থেকে ভারতে এসে রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছিলেন তিনজন। ফলে তন্দুরি-চিকেন কিছুতেই ঠিক পেশোয়ারের মতো তৈরি করতে পারছিলেন না জাগ্গি ও গুজরাল।অসংখ্য রেস্তোরাঁর মেনু তালিকায় গ্রাহকদের পছন্দের শীর্ষেই আছে এর অবস্থান। গবেষকদের দাবি, দেশভাগের আগে বর্তমান পাকিস্তানের পেশোয়ারে রেস্তোরাঁ খোলেন মোখা সিং লাম্বা। যার নাম ছিল ‘মোতি মহল’। সেখান চাকরি করতেন কুন্দন লাল জাগ্গি ও কুন্দন লাল গুজরাল। রেস্তোরাঁর ঠিক উলটো দিকে ছিল একটি মুদির দোকান। যার মালিক ছিলেন ঠাকুর দাস রাম। দেশভাগের সময় পাকিস্তান ছেড়ে দিল্লি চলে আসেন মোখা সিং লাম্বা। তার সঙ্গেই রাজধানীতে পা দেন জাগ্গি, গুজরাল ও ঠাকুর রাম। কিন্তু মুখরোচক এই তরকারি যা সারা বিশ্বের মানুষের কাছে একটি পরিচিত ও প্রিয় খাবার তা এখন আদালতে যুদ্ধের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত সপ্তাহে দিল্লি হাইকোর্টে এই খাবারের উৎস নিয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এই মামলায় দুটো প্রতিযোগী রেস্তোরাঁ এবং পরিবার জড়িত। উভয় দলই ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠিত শহরের বিখ্যাত মতি মহল রেস্তোরাঁর মালিকানা দাবি করার পাশাপাশি নিজেদের জনপ্রিয় এই খাবারের উদ্ভাবক বলেও দাবি করেছে। মূল রেস্তোরাঁর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কুন্দন লাল গুজরালের পরিবারের করা মামলায় তারা দাবি করে, গুজরাল এই খাবারের উদ্ভাবক এবং মিথ্যা কৃতিত্ব নেওয়ার দোষে প্রতিদ্বন্দ্বী দরিয়াগঞ্জের বিরুদ্ধে তারা মামলা করেছেন। গুজরাল পরিবার ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার দাবি করেছে। তারা এটাও অভিযোগ করেছে, দরিয়াগঞ্জ ভুলভাবে দাবি করেছে তারা মাখন এবং ক্রিম দিয়ে তৈরি একটি মসুর ডালের খাবার আবিষ্কার করেছে যা ‘ডাল মাখনি’ নামে পরিচিত। বাটার চিকেন কীভাবে আবিষ্কৃত হয়েছিল তার অসংখ্য ব্যাখ্যা রয়েছে। তবে সেগুলো সবই শুরু হয় মোখা সিং নামক একজন ব্যক্তি ও তার তিনজন কর্মচারীকে দিয়ে যার উপমহাদেশে অবস্থিত অন্তত তিনটি ভিন্ন রেস্তোরাঁ জড়িত।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত