ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ডিএসইতে ১৬ মাসে সর্বোচ্চ লেনদেন

ডিএসইতে ১৬ মাসে সর্বোচ্চ লেনদেন

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২০২৩ সালে দৈনিক গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৭৮ কোটি টাকা। ফ্লোর প্রাইস বা শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর প্রত্যাহারের দ্বিতীয় সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৯১৬ কোটি টাকা এবং আগের সপ্তাহে এর পরিমাণ ছিল ৯৭০ কোটি টাকা। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর ডিএসইতে লেনদেনে ইতিবাচক প্রবণতা বিদ্যমান ছিল। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশের পুঁজিবাজারে অধিকাংশ বিনিয়োগকারী ফ্লোর প্রাইসের কারণে লেনদেন করতে পারেননি। ফলে তাদের প্রায় ৭০ শতাংশ বিনিয়োগ আটকে ছিল। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর তারা এখন সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। ফ্লোর প্রাইস পুঁজিবাজারে এক ধরনের স্থবিরতা এনে দিয়েছিল। এটা প্রত্যাহারের পর প্রাতিষ্ঠানিক এবং মাঝারি শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা বাজারে লেনদেন করছেন। যার প্রভাব পড়েছে গত দুই সপ্তাহের লেনদেনে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রায় দেড় বছর পর ১৮ জানুয়ারি ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে এবং ২১ জানুয়ারি থেকে এটা কার্যকর হয়। এ সময় ৩৫টি কোম্পানি বাদে বাকি কোম্পানিগুলোর ওপর ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হয়। ২২ জানুয়ারি আরো ২৩টি কোম্পানির ওপর থেকেও ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হয়। এখন দেশের পুঁজিবাজারে শুধু ১২টি কোম্পানির ওপর ফ্লোর প্রাইস বহাল আছে। যে ১২ কোম্পানির ওপর এখনো ফ্লোর প্রাইস আরোপ রয়েছে, সেগুলো হলো- আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি বা বিএটিবিসি, বেক্সিমকো লিমিটেড, বিএসআরএম লিমিটেড, গ্রামীণফোন, ইসলামী ব্যাংক, খুলনা পাওয়ার, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ওরিয়ন ফার্মা, রেনাটা, রবি ও শাহজীবাজার পাওয়ার। বিএসইসির পক্ষ থেকে এই ১২টি প্রতষ্ঠানের ওপর ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখার কোনো কারণ উল্লেখ করা না হলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, যেসব কোম্পানির শেয়ার দর ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের উত্থান-পতনের ওপর বেশি প্রভাব ফেলে, মূলত সেগুলোর ওপরই ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখা হয়েছে। পুঁজিবাজারের পতন ঠেকাতে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই সর্বশেষ দফায় ফ্লোর প্রাইস আরোপ করেছিল বিএসইসি। এতে গত প্রায় দেড় বছর ধরে পুঁজিবাজারে তালিকাভুকক্ত বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন হচ্ছে না বললেই চলে। ফলে পুঁজিবাজারেও একধরনের স্থবিরতা নেমে আসে। এ অবস্থায় বাজারসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল। ডিএসইর তথ্য বলেছে, ২০২৩ সালে মোট ২৪৪ কার্যদিবসে ডিএসইতে ১ লাখ ৪১ হাজার ৬০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দৈনিক গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৭৮ কোটি টাকা। তালিকাভুক্ত মোট ৩৫৫টি কোম্পানির মধ্যে ২১৪টির শেয়ার দর ফ্লোর প্রাইসে আটকে ছিল। অর্থাৎ, তালিকাভুক্ত কোম্পানির একটি বড় অংশই গত বছর বলতে গেলে লেনদেন হয়নি। ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে প্রথম সপ্তাহে (২১ জানুয়ারি-২৫ জানুয়ারি) লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবস পুঁজিবাজারে বড় দরপতন হয়। এতে পাঁচ দিনেই ডিএসইর বাজার মূলধন প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা কমে যায়। অনেক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম ৩০-৪০ শতাংশ কমে যায়। তবে আগের সপ্তাহের তুলনায় গেল সপ্তাহে (জানুয়ারি ২৮-১ ফেব্রুয়ারি) ডিএসইর লেনদেন সামান্য কমলেও বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ১৪০ কোটি ৮৩ লাখ ৩৯ হাজার ৬২২ টাকা বা শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ। সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫৬ হাজার ১০৭ কোটি ১ লাখ ৪ হাজার ৮৩২ টাকায়। এ সপ্তাহে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রয়ের পরিবর্তে ক্রয়ে বেশি আগ্রহী ছিলেন। যার প্রভাবে বাজার মূলধন বেড়েছে। ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৭ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট বেড়েছে। বর্তমানে সূচকটি অবস্থান করছে ৬ হাজার ২১৩ পয়েন্টে। প্রধান সূচকের সঙ্গে ডিএসইর অপর দুই সূচকও বেড়েছে। বাছাই করা কোম্পানিগুলোর সূচক ডিএস-৩০ ২ দশমিক ১৭ পয়েন্ট ও শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১০ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট বেড়েছে। সপ্তাহ শেষে ডিএসইতে লেনদেনকৃত কোম্পনিগুলোর মধ্যে ৪০টির শেয়ারদর ছিল অপরিবর্তিত। দর কমেছে ১৭৫টির, বিপরীতে ১৮২ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত