রপ্তানি আয়ে রেকর্ড
প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আরিয়ান স্ট্যালিন
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বলতে নির্দিষ্ট সময়ে একটি দেশের অর্থনীতিতে পণ্য ও সেবার উৎপাদন বৃদ্ধি বোঝায়। সাধারণত কোনো দেশের মোট দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধির শতকরা হারকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সংজ্ঞা বলতে বোঝায় পণ্য ও পরিষেবার উৎপাদনের সামগ্রিক বৃদ্ধি- এক সময়ের থেকে অন্য সময়ের তুলনায়। এটি বাস্তব বা নামমাত্র পদে পরিমাপ করা হয় বলে জানা যায়। এর সহজ শর্তে, অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে প্রদত্ত সামগ্রিক উৎপাদন বৃদ্ধি হিসাবে উল্লেখ করা যেতে পারে অর্থনীতি. বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, সম্পূর্ণভাবে নয়, উৎপাদনের সামগ্রিক বৃদ্ধি সামগ্রিক বর্ধিত গড় প্রান্তিক উৎপাদনশীলতার সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকে। এটি সংশ্লিষ্ট আয়ের সামগ্রিক বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করে। এইভাবে, ভোক্তারা আরও বেশি ব্যয় এবং কেনাকাটা সম্পর্কে উন্মুক্ত হতে অনুপ্রাণিত হন, যা উচ্চতর জীবনমানের বা উন্নত জীবনযাত্রার মানের দিকে নিয়ে যায়। নতুন বছরের শুরুতেই দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বছরের প্রথম মাসে পণ্য রপ্তানিতে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা রপ্তানিকারকদের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি। এমন একসময়ে রপ্তানিতে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি হলো, যখন দেশে ডলার সংকটের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গত রোববার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে রপ্তানি খাতে প্রবৃদ্ধির সুখবরটি পাওয়া গেছে। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে বাংলাদেশ মোট ৫৭২ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের ৫১৪ কোটি ডলারের চেয়ে ৫৮ কোটি ডলার বা ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি এবং লক্ষ্যমাত্রার প্রায় কাছাকাছি। সদ্য সমাপ্ত জানুয়ারিতে দেশের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৭৬ কোটি ডলার। অর্থাৎ, লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় মাত্র ৪ কোটি ডলারের কম রপ্তানি হয়েছে। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম সাত মাস জুলাই-জানুয়ারিতে সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৩২৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩ হাজার ২৪৫ কোটি ডলার। অর্থাৎ, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক ৫২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে অবশ্য প্রবৃদ্ধি ছিল ১ শতাংশের কম।রপ্তানি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, পোশাক খাতে গত সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই সময়ে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৮৩৬ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২ হাজার ৭৪২ কোটি ডলার। তবে পোশাকের মধ্যে ভালো অবস্থায় রয়েছে নিটপোশাক রপ্তানি। গত জুলাই-জানুয়ারি সময়ে এ খাতের রপ্তানি দাঁড়ায় ১ হাজার ৬১৮ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৯৬ কোটি ডলার। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। ওভেন পোশাক রপ্তানি এখনো নেতিবাচক ধারায় রয়েছে, তবে গত জুলাই-ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে এসে এ খাতের রপ্তানি কিছুটা বেড়েছে। তাতে কমে এসেছে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির হার। গত জুলাই জানুয়ারিতে ১ হাজার ২১৮ কোটি ডলারের ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের ১ হাজার ২৪৬ কোটি ডলারের তুলনায় ২ দশমিক ২০ শতাংশ কম। পোশাকের পাশাপাশি আরো কয়েকটি খাতে রপ্তানি পরিস্থিতিরও উন্নতি হয়েছে। কোনো কোনো খাতে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির উন্নতি হয়েছে। গত জুলাই-ডিসেম্বরে পাট ও পাটপণ্যের রপ্তানিতে প্রায় সোয়া ১০ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি ছিল। জানুয়ারি শেষে তা কমে ৬ দশমিক ৮৫ শতাংশে নেমেছে। গত জুলাই-জানুয়ারিতে ৫১ কোটি ডলারের পাট ও পাটপণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৫৫ কোটি ডলার।ফুটওয়্যারের রপ্তানি নেতিবাচক থেকে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে।