তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নতুন নেতৃত্ব চূড়ান্ত করতে এবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৩৫টি পরিচালক পদে নির্বাচনকেন্দ্রিক দুই প্যানেল বা জোট সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের ৭৯ জন প্রার্থী হয়েছেন। আগামী ৯ মার্চ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবার সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার হিসেবে আছেন এস এম মান্নান। তিনি বর্তমানে বিজিএমইএ’র জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি। এর আগেও কয়েক মেয়াদে তিনি সহ-সভাপতি ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন। বর্তমানে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন তিনি। অন্যদিকে ফোরামের প্যানেল লিডার হলেন ফয়সাল সামাদ। তিনি বিজিএমইএ’র পরিচালক পদে আছেন। এর আগে একবার সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বিজিএমইএর ২০২৪-২৬ সাল মেয়াদের নির্বাচন বোর্ড গত শনিবার প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের ৭৯ জন প্রার্থী ৮১টি মনোনয়ন দাখিল করেছেন। এর মধ্যে দুই প্যানেলের লিডারই দুটি করে মনোনয়নপত্র কিনেছেন। ঢাকার ২৬ ও চট্টগ্রামের ৯ পদের বিপরীতে সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থী যথাক্রমে ৩০ ও ৯ জন। অন্যদিকে ঢাকায় ফোরামের ২৮ ও চট্টগ্রামে ১২ জন প্রার্থী রয়েছে। কাল বুধবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন উভয় প্যানেলই পদসংখ্যার সমান প্রার্থী রেখে বাকিদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বলবে বলে জানা গেছে। ২০১৩ সালে সাধারণ সদস্যদের সরাসরি ভোটে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচিত হয়েছিল। পরেরবার সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম দুই মেয়াদের জন্য সমঝোতা করে। সেই সমঝোতার প্রথম দফায় অর্থাৎ ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বরে সম্মিলিত পরিষদের সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে কমিটি হয়। সেই কমিটি নানা অজুহাত দেখিয়ে ৪৩ মাস দায়িত্ব পালন করে। পরের মেয়াদে সমঝোতার কমিটি করার উদ্যোগ নেয় দুই জোট। শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতা পরিষদ নামে একটি খণ্ডিত প্যানেলে প্রার্থী দেওয়া হয়। সে কারণে ঢাকায় নিয়ম রক্ষার ভোট হয়েছিল। তখন সভাপতি হয়েছিলেন রুবানা হক। সর্বশেষ গত ২০২১ সালের নির্বাচনে সম্মিলিত পরিষদ ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৩৫ পরিচালক পদের মধ্যে ২৪টিতে জয়ী হয়। আর এ বি এম সামছুদ্দিনের নেতৃত্বাধীন ফোরাম ১১ পরিচালক পদে বিজয়ী হয়। সভাপতি হন ফারুক হাসান। গত বছরের এপ্রিলে মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই দফায় এক বছর সময় বাড়িয়ে নেয় বর্তমান পর্ষদ। এবারের নির্বাচন নিয়ে এরই মধ্যে উত্তাপ ছড়িয়েছে। গত মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ২ হাজার ৫৬৩ জনের প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে ৪২৯ জনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আপিল বোর্ডে আবেদন করেন ফোরামের প্যানেল লিডার ফয়সাল সামাদ। তার অভিযোগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওয়েবসাইট তল্লাশি করে দেখা গেছে, এই ভোটারদের আয়কর প্রদানের হালনাগাদ তথ্য নেই। তখন বিষয়টি নিয়ে আপিল বোর্ড শুনানি করে। পরে ৬৭ জন ভোটার বাদ পড়েন। চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় এখন আছেন ঢাকার ২ হাজার ৩২ ও চট্টগ্রামের ৪৬৪ জন। ফোরামের হয়ে যারা নির্বাচন করছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন এটিএস অ্যাপারেলসের মোহাম্মদ আবদুস সালাম, নিউ এইজ গ্রুপের আসিফ ইব্রাহিম, অনন্ত গার্মেন্টসের ইনামুল হক খান, দেশ গার্মেন্টসের ভিদিয়া অমৃত খান, কেডিএসের সেলিম রহমান, কিউট ড্রেস ইন্ডাস্ট্রির শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ, ফ্যাশন ডট কমের খান মনিরুল আলম প্রমুখ।