নগরায়ণ, সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন প্রকল্প, বসতবাড়ি নির্মাণ, লবণাক্ততা, নদীভাঙনসহ নানা কারণে গত একদশকে আশঙ্কাজনক হারে কৃষিজমি কমেছে। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে সিডর-আইলা-আম্পানের মতো ঘূর্ণিঝড়, খরা, অতিবৃষ্টি, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস কৃষি খাতকে বহুমুখী ঝুঁকিতে ফেলেছে। এর মধ্যেও দেশে প্রতি বছর ধান-চালের উৎপাদন বাড়ছে। এক বছরে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি হারে চালের উৎপাদন বাড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশে। বিদায়ি বছরের চেয়ে নতুন বছরে উৎপাদন বাড়তে পারে ১ দশমিক ৮ শতাংশ। আর মোট চালের উৎপাদনে চীন ও ভারতের পর তৃতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) থেকে প্রকাশ করা গ্লোবাল ফুড আউটলুক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উৎপাদনের পরিমাণ পূর্বাভাসের তুলনায় কম হওয়ায় বিশ্বের অন্যতম চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ও পাকিস্তান এ বছর রপ্তানি কমাতে বাধ্য হয়েছে। ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডকেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম রপ্তানি করতে হবে। ভারত গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় ৪০ লাখ টন চাল কম রপ্তানি করবে। অন্যদিকে উৎপাদন কম হওয়ায় বাংলাদেশকে দুই বছর আগেও ২৬ লাখ ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করতে হয়েছিল। কিন্তু এ বছর উৎপাদন ভালো হওয়ায় বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ কমে ৮ লাখ টনে নেমে এসেছে। জুলাই থেকে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের জন্য প্রকাশ করা ওই প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। জাতিসংঘের এই সংস্থা প্রতি ছয় মাসের জন্য একবার করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। তাতে বাংলাদেশে গমের উৎপাদনও ১ লাখ টন বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গ্লোবাল ফুড আউটলুক প্রতিবেদনের তথ্য মতে, চীন চাল উৎপাদনে এখনো শীর্ষে রয়েছে। গত বছর দেশটিতে উৎপাদিত হয়েছে ১৪ কোটি ২৮ লাখ টন। আগামী বছরে (২০২৩-২৪) উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ১৪ কোটি ৩৪ লাখ টন। উৎপাদন বৃদ্ধি হতে পারে দশমিক ৪ শতাংশ। এরপর রয়েছে ভারত। গত বছর দেশটির উৎপাদিত হয়েছে ১৩ কোটি ৮ লাখ টন। আগামী বছরে উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ১৩ কোটি ১০ লাখ টন। উৎপাদন বৃদ্ধি হতে পারে দশমিক ১ শতাংশ।