বৈশ্বিক সংকটসহ বেশ কিছু কারণে কল-কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। এমন অবস্থায় আসন্ন গ্রীষ্মকালে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ চান ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে দেশে গুণগত জ্বালানির জোগান এবং দীর্ঘমেয়াদে শিল্প কল-কারখানাগুলোতে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিতে দেশের অভ্যন্তরে তেল, কয়লা, ও গ্যাস অনুসন্ধানের তাগিদ দিয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। গতকাল রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মতিঝিল এফবিসিসিআই কার্যালয়ে ‘পাওয়ার, এনার্জি অ্যান্ড ইউটিলিটিস’ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় ব্যবসায়ীরা এই আহ্বান জানান।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ ব্যবসায়ীদের প্রাণের চাহিদা। কিন্তু বৈশ্বিক সংকটসহ বেশ কিছু কারণে কল-কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।
উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ফলে স্বাভাবিকভাবেই পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। আসন্ন গ্রীষ্মকালে কীভাবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায় এ বিষয়ে আমরা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। জ্বালানি খাতের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে জ্বালানির কোনো বিকল্প নেই। কীভাবে এই খাতের উন্নয়ন করা যায় আপনারা সেসব প্রস্তাব আমাদের কাছে তুলে ধরেন।
আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে আপনাদের প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, ১৫ বছর আগে দেশের জ্বালানি খাতের যে অবস্থা ছিলে, ১৫ বছরে পরে এসে সেই সমস্যার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। জ্বালানি নিয়ে আমরা এখন ভালো অবস্থানে আছি। এক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ ও বিনিয়োগ ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
কমিটির চেয়ারম্যান ও এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) হুমায়ুন রশিদ বলেন, জ্বালানির জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এখনো আমরা পৌঁছতে পারিনি। জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিতে আমাদের ক্রস বর্ডার বাণিজ্যে গুরুত্ব দিতে হবে।
যেমন- গ্রীষ্মকালে এখানে বিদ্যুতের চাহিদা বেশি থাকায় আমরা কীভাবে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারি একই সাথে শীতকালে প্রয়োজনে নেপালে কীভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায় এগুলো নিয়ে জোরদার উদ্যোগ নিতে হবে। এখানে ভারত অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তাদেরকেও আলোচনায় রাখতে হবে।
কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ ও এফবিসিসিআই পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াদ আলী বলেন, জ্বালানি সরবরাহ ঠিক রাখতে হলে তেল, ও কয়লা অনুসন্ধান জোরদারের বিকল্প নেই। আমাদের প্রচুর কয়লা ও পাথর থাকার পরও বাইরে থেকে প্রচুর পরিমাণে কয়লা ও পাথর আমদানি করতে হচ্ছে। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি মো. মুনির হোসাইন, এফবিসিসিআই পরিচালক হাজী হাফেজ হারুন, সাবেক পরিচালক ও ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর, এফবিসিসিআই মহাসচিব মো. আলমগীর প্রমুখ।