ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ভারত

বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ভারত

অবশেষে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে ৩ লাখ ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে মন্ত্রীদের কমিটি এ অনুমোদন দিয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের কৃষকরা। তারা আন্তর্জাতিক বাজারে ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন। নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার অন্যতম কারণ হলো গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজের বিশাল মজুত রয়েছে। দেশটির সরকারের এমন ঘোষণায় গত রোববার থেকে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করে। বাজারে প্রতি ১০০ টনে কমেছে ১০০ রুপি। মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ উৎপাদনকারী কৃষক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ভারত দিঘোল বলেছেন, রপ্তানি শুরু হলে আমরা আশা করছি আন্তর্জাতিক বাজারে ভালো দাম পাব। এদিকে পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘আমরাও শুনেছি ভারত সরকার আমাদের দেশে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে পারিনি। এ ব্যাপারে দূতাবাস কাজ করছে। এই পেঁয়াজ সরকারি ও বেসরকারিভাবে আসবে। বেসরকারি উদ্যোক্তারা ইচ্ছা করলে এক সপ্তাহের মধ্যেই আনতে পারবেন। আর আমরা টিসিবির জন্যও পেঁয়াজ আনব। তা রমজানের আগেই আনা হবে। সেভাবে কাজ করা হচ্ছে।’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে মন্ত্রীদের একটি কমিটি রোববার পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এবং বিজেপির দিন্ডোরির (নাসিক গ্রামীণ) কেন্দ্রের সাংসদ ভারতী গণমাধ্যমকে জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীদের (জিওএম) একটি বৈঠক হয়, সেখানে পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সম্পর্কিত বিভিন্ন শর্তাবলির বিষয়ে আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। ৯ ফেব্রুয়ারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে বৈঠক করে রমজানের আগে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ এবং এক লাখ টন চিনি রপ্তানির আহ্বান জানিয়েছিলেন। বৈঠকে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা প্রত্যাহার এবং বিশেষ করে রমজান মাসে মূল্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে পীযূষ গয়ালকে অনুরোধ করেন তিনি। গত বছর দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন পর্যাপ্ত হলেও দাম বেড়ে যায়। বাধ্য হয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর সরকার দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজিতে সর্বোচ্চ ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা দাম নির্ধারণ করে দেয়। তারপরও পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আবার ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বাজারে পেঁয়াজের দাম হু হু করে বৃদ্ধি পায়। গত ডিসেম্বরে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলে বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে। ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হলে দাম কিছুটা কমতে পারে বলে মনে করেন শ্যামবাজারের পেঁয়াজ আমদানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মাজেদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, তা দিয়ে বছরের চাহিদা পূরণ হয় না। ভারত, চীনসহ কয়েকটি দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। বিশেষ করে, ভারতীয় পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেলে বাজারে দাম অনেক বেড়ে যায়। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে রাজি হওয়ায় দাম কমে আসবে বলে মনে করি।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত