টানা দরপতনে শেয়ারবাজারের লেনদেন ক্রমাগত কমছে। গতকাল মঙ্গলবার প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে ৭৬৪ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এ লেনদেন সোমবারের তুলনায় প্রায় ৫৪ কোটি টাকা কম। তবে দুই সপ্তাহ আগের তুলনায় কম হাজার কোটি টাকা। তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারদরের ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন দরসীমা তুলে নেওয়ার পর গত ২২ জানুয়ারি থেকে ক্রমাগত লেনদেন বেড়েছিল। ওই সময়ে দিনে ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকার লেনদেন প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছে যায়। গত ৮ ফেব্রুয়ারি সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। ওই দিনের তুলনায় গতকালের লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪১ শতাংশ। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে লেনদেন কমছে। দরপতনের ফলে অনেকের বিনিয়োগকৃত শেয়ারমূল্য কমেছে। ফলে সক্রিয় বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনাবেচার পরিমাণ সীমিত হয়ে পড়েছে। মাঝে নতুন করে বিনিয়োগ এলেও সে ধারাও স্তিমিত, যার সার্বিক প্রভাব আছে লেনদেনে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দরপতনে কম-বেশি সব খাতের লেনদেন কমেছে। তুলনামূলক বেশি কমেছে ওষুধ ও রসায়ন, প্রকৌশল, বস্ত্র, ব্যাংক এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের লেনদেন। যেমন গত ৮ ফেব্রুয়ারি ডিএসইতে ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩৩৩ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল। গতকাল তা কমে ১৬৭ কোটি টাকায় নামে। অবশ্য খাতওয়ারি লেনদেন হারে এ খাতের অংশ বেড়েছে। ৮ ফেব্রুয়ারির মোট লেনদেনে এ খাতের লেনদেন ছিল মোট লেনদেনের ১৮ শতাংশের কম, তবে গতকাল এ হার ছিল প্রায় ২৩ শতাংশ। এদিকে গতকাল টানা সপ্তম দিনে মূল্যসূচক ডিএসইএক্সও সামান্য কমেছে। ২ পয়েন্ট কমে নেমেছে ৬২৫৬ পয়েন্টে। টানা সাত দিনে সূচক হারিয়েছে ১৯১ পয়েন্ট। যদিও গতকাল দর হারানো শেয়ার সংখ্যার তুলনায় দর বৃদ্ধি পাওয়া শেয়ার বেশি ছিল। বেড়েছে ১৮৩ কোম্পানির শেয়ার, কমেছে ১৬৩টির এবং অপরিবর্তিত থেকেছে ৪২টির দর।
শেষ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শেয়ারের দর কমলেও দিনের লেনদেনের শুরুটা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। লেনদেনের প্রথম ঘণ্টা শেষে ২৭৭ শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে মাত্র ৪৫টি দর হারিয়ে কেনাবেচা হতে দেখা যায়। বেলা সাড়ে ১১টায় অধিকাংশ শেয়ারের দরবৃদ্ধিতে ভর করে ডিএসইএক্স সূচক ৩৭ পয়েন্ট বেড়ে ৬২৯৬ পয়েন্ট ছাড়ায়। পরের ২ ঘণ্টায় ক্রমাগত দরপতনে ওই অবস্থান থেকে ৪৭ পয়েন্ট হারিয়ে সূচকটি ৬২৪৮ পয়েন্ট পর্যন্ত নামে।
খাতওয়ারি লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এদিন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বস্ত্র, তথ্য-প্রযুক্তি, পাট এবং কাগজ ও ছাপাখানা খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। বিপরীতে বিমা চামড়া, সেবা ও নির্মাণ, ভ্রমণ ও অবকাশ এবং টেলিযোগাযোগ খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দর কমেছে।