জিডিপিতে বিমার অবদান কমছে পুরো বিশ্বেই
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিমা খাতের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। অবশ্য চলমান মূল্যস্ফীতিও এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে জীবন ধারণেই সাধারণ মানুষের আয় চলে যাচ্ছে। এ চিত্র শুধু বাংলাদেশেই নয়, পুরো বিশ্বে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও সুদহার বৃদ্ধির প্রভাবে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই জিডিপিতে বিমার অবদান কমছে। বর্তমানে দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) বিমা খাতের অবদান শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ, যেখানে বিশ্বে গড় হচ্ছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। সরকার দেশের শতভাগ জীবন ও সম্পদ বিমার আওতায় আনার লক্ষ্যে সরকার জাতীয় বিমানীতি ২০১৪ গ্রহণ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে ২০২১ সালের মধ্যে জিডিপিতে বিমা খাতের অবদান ৪ শতাংশ করতে হবে, যা এখনো বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। বরং করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতিতে উল্টো চিত্র দেখা গেছে। অবশ্য জিডিপিতে বিমার অবদান শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের অধিকাংশ দেশেরই কমেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণেই এ খাতের অবদান কমছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্ব জিডিপিতে বিমার অবদান ২০২০ সালে ছিল ৭ দশমিক ২ শতাংশ, যা দুই বছর ধরেই কমছে। জিডিপিতে বিমার সবচেয়ে বেশি অবদান যুক্তরাষ্ট্রের, ২০২২ সালে এ দেশটির জিডিপিতে বিমার অবদান ছিল ১১ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০২০ সালে এটি ছিল ১২ শতাংশ। আলোচিত সময়ে সবচেয়ে কমেছে তাইওয়ানের। ২০২০ সালে দেশটির জিডিপিতে বিমা খাতের অবদান ছিল ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ২০২২ সালে ১১ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে আসে। ২০২০ সালে চীনের জিডিপিতে বিমার অবদান ছিল সাড়ে ৪ শতাংশ, যা ২০২২ সালে ৩ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে আসে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের জিডিপিতে বিমা খাতের অবদান ৪ শতাংশ, এটি ২০২০ সালে ছিল ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। বাংলাদেশের বিমা খাতের সমস্যাগুলোর মধ্যে পলিসি তামাদি হওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শুধু এ সমস্যা সমাধান করা গেলে জিডিপিতে বিমার অবদান অনেক বৃদ্ধি করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিমা খাতের বিশেষজ্ঞরা। প্রতিবছর প্রায় ৭৮ শতাংশ জীবন বিমা পলিসি তামাদি হয়ে যায়। এ ছাড়া বিমা খাতের কিছু কোম্পানিতে এমন অনিয়মের কারণে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। যদিও এখন অধিকাংশ কোম্পানিই নির্ধারিত সময়ে বিমার দাবি পরিশোধ করছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষও (আইডিআরএ) বিমা দাবি পরিশোধে বেশ উদ্যোগী। তারপরও বিমার প্রতি জনসাধারণের যে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে, তা পুরো দেশকেই পিছিয়ে দিচ্ছে বিমা খাতে।