পতনের বাজারে চমক দেখাল পচা জুট স্পিনার্স

প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া ৮০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের স্থান হয়েছে দাম কমার তালিকায়। এমন পতনের বাজারেও দাম বাড়ার ক্ষেত্রে কিছু প্রতিষ্ঠান দাপট দেখিয়েছে। এর মধ্যে সব থেকে বেশি দাপট দেখিয়েছে বছরের পর বছর ধরে লোকসানে নিমজ্জিত জুট স্পিনার্স লিমিটেড। লোকসানে নিমজ্জিত এই কোম্পানিটি বছরের পর বছর ধরে কোনো লভ্যাংশ দিতে না পারলেও গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশের কাছে কোম্পানিটির শেয়ার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আগ্রহের শীর্ষে চলে আসে। এতে ডিএসইতে দাম বাড়ার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে এই কোম্পানিটি। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে বেড়েছে ১০ কোটি টাকার বেশি। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩২০টির। আর ২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ১৪১ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট। আর বাজার মূলধন কমেছে ১১ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা।

এই পতনের বাজারেই গত সপ্তাহজুড়ে জুট স্পিনার্সের শেয়ার দাম বেড়েছে ১৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৫৯ টাকা ১০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সম্মিলিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ১০ কোটি ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দাম দাঁড়িয়েছে ৩৭১ টাকা ৫০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ছিল ৩১২ টাকা ৪০ পয়সা। শেয়ার এমন দাম হলেও কোম্পানিটি বছরের পর বছর ধরে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয় না। কোম্পানিটি সর্বশেষে কবে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছে সে সংক্রান্ত তথ্য ডিএসইর ওয়েবসাইটেও পাওয়া যায়নি। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ায় ডিএসই কোম্পানিটিকে ‘জেড’ গ্রুপ বা পচা কোম্পানির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের প্রথম ছয় মাসে (২০২৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত) কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি লোকসান করেছে ১১ টাকা ৬৯ পয়সা। এর আগে ২০২৩ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ৮৩ টাকা ৭৮ পয়সা। তার আগের ২০২২ সালে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ৪৪ টাকা ৮৪ পয়সা। ১৯৮৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন মাত্র ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আর শেয়ার সংখ্যা ১৭ লাখ। এর মধ্যে ৩৯ দশমিক ৮২ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৩ দশমিক ২০ শতাংশ শেয়ার আছে। এদিকে দফায় দফায় দাম বাড়লেও বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে চাননি। ফলে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে মাত্র ২ কোটি ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা। জুট স্পিনার্স’র পরেই গত সপ্তাহে দাম বাড়ার তালিকায় ছিল সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স।

সপ্তাহজুড়ে এই কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ১৮ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ দাম বাড়ার মাধ্যমে পরের স্থানে রয়েছে জিকিউ বলপেন। এছাড়া গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকাণ্ড গোল্ডেন সনের ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ, ফাইন ফুডের ১৩ দশমিক ১৪ শতাংশ, আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ১২ দশমিক ২০ শতাংশ, ফু-ওয়াং সিরামিকের ১০ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, আফতাব অটোমোবাইলের ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের ৬ দশমিক ৭৮ শতংশ এবং বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ দাম বেড়েছে।