বড় অঙ্কের রাজস্ব ঘাটতির সম্ভাবনা : সিপিডি

প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব ঘাটতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। বিগত ছয় মাসের রাজস্ব আদায়ের চলমান ধারা পর্যবেক্ষণে এ অর্থবছর শেষে ৮২ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি হতে পারে বলে মনে করছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। গতকাল শনিবার সকালে ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫-এর প্রস্তাবনা উপস্থাপন অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন এ তথ্য জানান। ফাহমিদা খাতুন তার উপস্থাপনায় বলেন, এমন একটা সময় বাজেট প্রণয়ন হতে যাচ্ছে, যখন সামষ্টিক অর্থনীতি নেতিবাচক ধারায় রয়েছে। দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকের তারল্য সংকট, বাজেট বাস্তবায়নে নিম্ন ও শ্লথগতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নগামী এবং রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স নিচের দিকে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা যেটা আমরা দেখতে চাই বিশেষ করে উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও নিম্ন মূল্যস্ফীতিসহ অন্যান্য সূচক যেখানে থাকার কথা সেটা নেই। বরং চরমভাবে চাপের মুখে পড়েছে। এর কারণ আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ দুটোই। সিপিডি বলছে, রাজস্ব আহরণে ধীরগতি, মূল্যস্ফীতি ও ডলার সংকটসহ নানা কারণে দেশের অর্থনীতি চাপে রয়েছে। এর ফলে আমরা সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা হারিয়ে ফেলেছি।

সেই স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করাটাই হবে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের মূল উদ্দেশ্য। ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাজেট প্রণয়ন হয় এক বছরের জন্য। বাজেটে যে নির্দেশনা থাকবে, সেগুলো যেন চ্যালেঞ্জগুলো মেটাতে পদক্ষেপ নিতে পারে। মূল্যস্ফীতির চাপ কমানো, টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীলতা রাখা ও দরিদ্র মানুষের স্বার্থের দিকে নজর দিতে হবে।

প্রস্তাবনায় সিপিডি বলছে, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট এমন সময়ে উপস্থাপন করা হবে, যখন দেশ নানাবিধ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। সিপিডির মত, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাই নীতিনির্ধারকদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে। বৈদেশিক মুদ্রার হারকে স্থিতিশীল করা মূল্যস্ফীতি কমানোর দিকে নজর দিতে হবে।

জিডিপি প্রবৃদ্ধির পরিবর্তে দুর্বল ও সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীর জন্য সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। সিপিডির সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, অর্থপাচার রোধে এনবিআরকে শক্তিশালী ভূমিকা নেওয়া, অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ বন্ধ করা, করদাতাদের হয়রানি বন্ধ করা, ইএফডি যন্ত্র সহজলভ্য করা, ওষুধের ওপর ভ্যাট কমানো। এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ও আমদানি করা বই এসবে শুল্ক, ভ্যাট ও কর কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে সিপিডি। ফাহমিদা খাতুন বলেন, সরকারি ব্যয় কোথায় করবো, প্রাধিকার পরিষ্কার করতে হবে। বাজেটে মূল্যস্ফীতির চাপ মাথায় রেখে সেখান থেকে রেহাই দেওয়ার বিষয়টি মনে রাখা উচিত। পণ্যমূল্য কমাতে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ও অর্থব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন। সেই সঙ্গে মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতির মধ্যে সমন্বয় করতে হবে।