দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি

রোজায় কষ্টে নিম্ন আয়ের মানুষ

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

রোজা রেখেই রাজধানীতে রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন বাগেরহাটের দেলোয়ার শেখ। চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ। রাজধানীর খিলগাঁওয়ে পরিবার নিয়ে থাকেন ভাড়া বাসায়। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রমজানে কামাই রোজগার কইমা গেছে। মানুষ বাইর হয় কম। সারাদিন গাড়ি চালান যায় না। আগে যেখানে হাজার-বারোশ টাকা কামাই হইত। অহন ৫০০ থেকে ৬০০ করতে অবস্থা খারাপ হয়। তার উপর জিনিসপত্রের দাম। চলতে অনেক কষ্ট হইয়া যাইতেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাজারে সব কিছুরই দাম বেশি। মাংসের দোকানে যাইতে পারি না। মাঝেমধ্যে কম দামের মাছ-টাচ কিনি। আল্লাহ চালাচ্ছে।’ শুধু দেলোয়ার শেখই নয়। রমজানে নিত্যণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে কষ্টে আছেন প্রায় সব নিম্ন ও মধ্য-আয়ের মানুষ। রাজধানীর সিএনজি অটোরিকশাচালক মোশাররফ জানান, বর্তমানে সিএনজি চালিয়ে যে আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। বিশেষ করে রোজা শুরু হওয়ার পর আয় অনেক কমে গেছে। এর কারণ জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিন সিএনজির মালিককে ভাড়া বাবদ জমা দিতে হয় ১ হাজার ২০০ টাকা, গ্যাস কিনতে হয় ৪০০ টাকা। এর সঙ্গে রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা দেওয়াসহ তার প্রায় ২ হাজার টাকা খরচ হয়। এরপর যে টাকা হাতে থাকে তা নিয়ে ঘরে ফিরতে পারেন। অর্থাৎ, দিনে আড়াই বা ৩ হাজার টাকা ভাড়া পেলে ৫০০ বা ১ হাজার টাকা ঘরে নিতে পারেন। তিনি বলেন, বর্তমানে বাজারের যে অবস্থা, তাতে তাদের মতো বেশিরভাগ সিএনজিচালকের খাবারে ভালো কিছু জুটছে না। ইচ্ছা থাকলেও ভালো খাবার খেতে পারেন না। একদিকে তরিতরকারি ও অন্যান্য সদাইপাতির দাম বেশি। আবার তাদের রোজগারও এখন কম। সব মিলিয়ে সংসারের চাহিদা মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রতি বছর রমজান এলেই যেন পাগলা ঘোড়া হয়ে উঠে নিত্যপণ্যের দাম। রোজার কয়েক দিন আগে থেকেই দাম বাড়া শুরু হয় পণ্যের। নিম্ন আয়ের মানুষদের ভরসা করতে হয় ফুটপাতের দোকানগুলোতে। রাজধানীর কমলাপুর এলাকায় ফুটপাতে বাজার করতে আসা এক নারী জানান, তিনি একটি কারখানায় চাকরি করেন। তার বেতন ৭ হাজার টাকা। তার ওভার টাইম খুব কম হয়। তিনি বলেন, ‘সাত হাজার টাকা দিয়ে কীভাবে বাজার থেকে ভালো শাকসবজি কিনব। তাই কম মূল্যে জিনিসপত্র কিনতে ফুটপাতের বাজারে এসেছি। আরমান নামের আরেক কারখানার শ্রমিক বলেন, ‘রমজানের আগের দিনই বাজারে চাল, ডাল, চিনি, লেবু ও ছোলার দাম বাড়ছে।