‘আমাদের দেশে কেএফসি, পিৎজা হাট বা ডমিনোজ পিৎজা এসে ব্যবসা করছে, কিন্তু আমাদের সুলতানস ডাইন বা স্টার কাবার কেন সারাবিশ্বে যেতে পারছে না? আমি এমন পরিবেশ দেখতে চাই যেন আমাদের খাবার বিশ্বমানের হয়।’ বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) জাইকা প্রজেক্টের উদ্যোগে আয়োজিত ঢাকা জেলা ও মেট্রোপলিটন এলাকার খাদ্যস্থাপনায় কর্মরত খাদ্যকর্মীদের ‘নিরাপদ উপায়ে খাবার প্রস্তুত, বিক্রয় ও সংরক্ষণ’ নামে আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জাকারিয়া এসব কথা বলেন। রাজধানীর ইস্কাটনে বিয়াম মিলনায়তনে গতকাল সকালে আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ‘আমি যেন রেস্টুরেন্টে গিয়ে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে পারি, সে বিষয়ে আপনাদের সচেতন থাকতে হবে। আপনাদের পরিবেশিত খাদ্য যেন খাদ্যবাহিত রোগের কারণ না হয়।’ রেস্টুরেন্টে পরিবেশিত খাবার যাতে বাসার খাবারের চেয়েও ভালো হয় সে বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আপনারা নতুন কিছু জানবেন, আমরা নতুন কিছু জানবো, উভয়ের পারস্পরিক জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে আমরা দেশে নিরাপদ খাদ্যের সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলে দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বে প্রতি ১০ জনে একজন অনিরাপদ খাবার গ্রহণের কারণে অসুস্থ হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশে ১ লাখ ১৪ হাজার মানুষ প্রতি বছরে ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করছে, যার মূল কারণ অনিরাপদ খাদ্য। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহা. হারুণ-অর-রশীদ। তিনি বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে অন্যদের সহযোগিতায় আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। কিন্তু খাদ্যের নিরাপত্তায় আমাদের আরো জোর দিতে হবে। সেজন্য যারা খাদ্য সরবরাহ করেন, তাদের যেন সচেতন থাকতে হবে, ঠিক তেমনি যারা ভোক্তা, তাদেরও খাবার গ্রহণের সময় সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। বিএফএসএ কর্তৃপক্ষের সচিব ও জাইকা প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক মো. আখতার মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএফএসএ’র দুই সদস্য ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ও ড. মোহাম্মদ শোয়েব। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মনিটরিং অফিসার ইমরান হোসেন মোল্লা। অনুষ্ঠানে খাদ্যকর্মীদের খাবার প্রস্তুত, পরিবেশনা, সংরক্ষণ, পরিবহন, লেবেলিং, নিরাপদ খাদ্য আইন ও এর বিধি-প্রবিধি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি, খাদ্যকর্মীদের করণীয়, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার উপায়, ভোক্তার সঙ্গে আচরণ এবং নিরাপদ খাদ্যের পরিবেশ তৈরিতে করণীয় বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এ সময় তাদের মাস্ক, এপ্রোন, ক্যাপ, গ্লাভস বিতরণ করা হয়। এতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের প্রায় ২০০ জন খাদ্য সংশ্লিষ্ট কর্মী অংশগ্রহণ করেন।