দেশে প্রতিটি স্তরেই ভয়াবহ সিন্ডিকেট বিদ্যমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, সিন্ডিকেট শুধু পাইকারি বা খুচরা ব্যবসায়ীদের মধ্যেই নয়, পরিবহন সেক্টরেও ব্যাপকমাত্রায় দেখা যায়। যার কারণে চাইলেও বিক্রেতারা কম মূল্যে পণ্য বিক্রি করতে পারেন না। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে তরুণ উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবন চত্বরে ন্যায্যমূল্যে তরমুজ (পিস হিসাবে) বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধনে এসে তিনি এসব কথা বলেন। ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, সিন্ডিকেট আসলে সব জায়গায়। আমরা দেখেছি, ট্রাকের ভাড়া এমনিতে ৪০ হাজার টাকা, তরমুজ বিক্রি করতে চাইলে সেই ট্রাকের ভাড়া ৬০ হাজার টাকা হয়ে যায়। আমের সময় দেখি ট্রাক ভাড়া ৫০ শতাংশের মতো বেড়ে যায়। কোরবানির পশুর সময়ও দেখি একই ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, আমরা চাই এসএমই ফোরামসহ অন্যান্য তরুণ উদ্যোক্তা যারা আছেন, সবাই এগিয়ে আসুক। আমরা সবাইকে সহযোগিতা করছি এবং করবো। তারা ট্রাকে করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করবে। এক্ষেত্রে যদি কোনো বাধা আসে, সেটি দূর করার কাজটা আমরা করছি। সফিকুজ্জামান বলেন, আমরা মিডিয়ায় মাধ্যমে একটা বার্তা দিতে চাই; মানুষ এখন সচেতন হচ্ছে। সুমন হাওলাদারের মতো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা আরো অনেক বেশি হবে। এসব উদ্যোগ বিস্ফোরণের মতো দেশব্যাপী আরো ছড়িয়ে যাবে। এখন শুধু ঢাকা সিটিতে থাকলেও খুব শিগগিরই অন্যান্য সিটিগুলোতেও ছড়িয়ে যাবে। তরমুজদের দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পটুয়াখালী-বরগুনাসহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা যে তরমুজ ১০০ টাকায় বিক্রি করে, সেটি ঢাকায় আমাদের ৮০০ টাকা করে কিনতে হয়। তার মানে সাপ্লাই চেইনে আমাদের মূল সমস্যা। সুমন হাওলাদার এই সিন্ডিকেট ভাঙার উদ্যোগ নিয়েছেন, তিনি ন্যায্য মূল্যে তরমুজ বিক্রি শুরু করেছেন, এই কার্যক্রমকে আমরা সাধুবাদ জানাই। যেখানে একটা তরমুজ কৃষক পায় ৮০ থেকে ১০০ টাকা, সেখানে বাজার থেকে ভোক্তাদের কিনতে হচ্ছে ৪ থেকে ৫ গুণ অতিরিক্ত দামে। আমরা চাই কৃষক যেন ন্যায্যমূল্য পায়, ভোক্তাও যেন সাশ্রয়ে কিনতে পারে। ভোক্তার ডিজি আরো বলেন, আপনারা দেখেছেন দেশে গরুর মাংস নিয়ে কী হয়েছে। সেখানে প্রমাণ হয়েছে, ব্যবসায়ীরা চাইলেই কম দামে বিক্রি করতে পারেন। আমরা চাচ্ছি যারা উৎপাদন করে এবং যারা ভোগ করে, তাদের মধ্যে কোনো ব্যারিয়ার থাকবে না। এটি আমরা ভাঙতে চাই।