দেশে ডলার সংকট যেন কাটছেই না। এক্ষেত্রে কাজে আসছে না বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া কোনো উদ্যোগই। বরং প্রতিনিয়ত ডলার সংকট আরো প্রকট হচ্ছে, যার প্রভাব পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুতে, রিজার্ভ নেমেছে তলানিতে। এ প্রেক্ষাপটে এবার ডলার সংকট কাটাতে অফশোর ব্যাংকিংয়ে তোড়জোড় শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত রোববার বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠকও করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈঠক শেষে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ’র (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আরএফ হোসেন বলেন, অফশোর ব্যাংকিং ব্যবস্থা হলো ব্যাংকের ভেতরে পৃথক ব্যাংকিং সেবা। প্রচলিত ব্যাংকিং বা শাখার কার্যক্রমের চেয়ে ভিন্ন এটি। অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রমে আমানত গ্রহণ ও ঋণ বৈদেশিক উৎস থেকে আসে ও বিদেশি গ্রাহকদের দেওয়া হয়। বিদেশি কোম্পানিকে ঋণ এবং বিদেশি উৎস থেকে আমানত সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যবসা হয় এ ব্যাংকিংয়ে। তিনি বলেন, এটা ভালো উদ্যোগ।
বাংলাদেশি যারা বিদেশে আছেন তারা যেন তাদের ফরেন কারেন্সি বাংলাদেশে এনে রাখেন। এতে আমরাও ভালো ইন্টারেস্ট রেট দেব। ভারত বিগত ৫ থেকে ৭ বছরে এটাতে খুব সফল হয়েছে। ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ভালো করেছে। আমরা শুরু করছি। আমাদের এখন প্রয়োজন সব ব্যাংককে এটা ভালোমতো বুঝিয়ে এর প্রোডাক্ট তৈরি, মার্কেটিং এবং বিভিন্নভাবে এটাকে প্রমোশন করা। সেটা কীভাবে কী হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। চলমান মার্জার (একীভূত) প্রক্রিয়া নিয়ে এবিবি চেয়ারম্যান বলেন, চার-পাঁচটা ব্যাংক নিজেরাই মার্জারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সময়মতো তারা তাদের কাজ করতে থাকবে। এটা নিয়ে এত হইচই করার প্রয়োজন নেই, ধীরস্থিরভাবে হবে। কোনো ব্যাংক করতে চাচ্ছে কী চাচ্ছে না; এটা তাদের ব্যাংকের জন্য প্রযোজ্য। ব্যাংক একীভূত সারা পৃথিবীতে হয়, অস্বাভাবিক কিছু না। আমাদের দেশেও আস্তে-ধীরে হবে। গত ২২ এপ্রিল অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের অর্জিত মুনাফার (সুদ) ওপর কোনো কর দিতে হবে না- মর্মে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ অফশোর ব্যাংকিং আইন ২০২৪ এর খসড়া প্রস্তুত করে। খসড়া বিধানে স্টেকহোল্ডার হিসেবে এনবিআরের মতামত অগ্রাহ্য করা হয়েছিল। খসড়া আইনের দফা ১৩(ক) অনুযায়ী অফশোর ব্যাংকিং ব্যবসায় অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট কর্তৃক অর্জিত সুদ বা মুনাফার ওপর আয়কর বা অন্য কোনো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কর আরোপ করা যাবে না।