সদ্য সমাপ্ত এপ্রিলজুড়ে উত্থান-পতনে টালমাটাল ছিল স্বর্ণের দেশীয় বাজার। মাসটিতে ১২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছে বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এরমধ্যে টানা সাতবারসহ কমানো হয়েছে মোট আটবার। টাকার অংকে মোট ৮ হাজার ৩৮৭ টাকা কমেছে এই মাসে। বাজুস বলছে সদ্য সমাপ্ত এপ্রিল মাসে ১২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। এটি এক মাসে সবচেয়ে বেশি দাম সমন্বয়ের রেকর্ড। স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম কমছে। ফলে দামও নিম্নমুখী। বাজুসের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী গত মঙ্গলবার সবশেষ দাম সমন্বয় করা হয়। এতে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ভরিতে ৪২০ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১১ হাজার ৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ফলে দেশের স্বর্ণের বাজার পৌঁছায় ৪ মাস আগের দামে। অর্থাৎ ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর স্বর্ণের দাম ছিল ১ লাখ ১১ হাজার ৪১ টাকা। যা বর্তমান বাজারে স্বর্ণের দামের সমান। এপ্রিলজুড়ে বাজুসের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিগুলো বিশ্লেষণে দেখা যায়, মাস শুরু হয়েছিল দাম বাড়ার প্রবণতা দিয়ে। দেখা গেছে মূল্য সমন্বয়ের প্রথম বিজ্ঞপ্তি আসে ৬ এপ্রিল। এতে ভরিতে বাড়ানো হয় ১ হাজার ৭৫০ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের একভরি স্বর্ণের মূল্য দাঁড়ায় ১ লাখ ১৫ হাজার ৮২৪ টাকায়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১০ হাজার ৫৭৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৪ হাজার ৭৭০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৮ হাজার ৯৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তি আসে ৮ এপ্রিল। সে সময় ভরিতে ১ হাজার ৭৫০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের একভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ২০৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৬ হাজার ২২৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৮০ হাজার ১৯০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরের বিজ্ঞপ্তির জন্য অবশ্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ১০ দিন। অর্থাৎ ১৮ এপ্রিল ফের দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ায় বাজুস। সে সময় ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে একভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা। যা এখন পর্যন্ত দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম প্রতি ভরিতে ১ হাজার ৩৮৯ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭৮ হাজার ৮০১ টাকা। গত ২০ এপ্রিল স্বর্ণের দাম ভরিতে ৮৪০ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাজুস। স্থানীয় বাজারে ১ ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ১৯৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এক দিন পর ফের বাড়ে স্বর্ণের দাম। অর্থাৎ ২১ এপ্রিল স্থানীয় বাজারে ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৭০৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৮ হাজার ৬৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর থেকে স্বর্ণের বাজার ছিল নিম্নমুখী। ধস নামা স্বর্ণের বাজারে মাসের শেষ আট দিনে কমানো হয় টানা ৭ দফায়। অর্থাৎ ২৩ এপ্রিল ভরিতে ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা নির্ধারণ করে বাজুস। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। গত ২৪ এপ্রিল ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১০০ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৯ হাজার টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৫ হাজার ২০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়।