বিএসইসি কমিশনার
শেয়ারবাজারে চালু হবে ডেরিভেটিভস পণ্য
প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
অর্থনীতিতে যে পরিবর্তন হয়েছে সে অনুযায়ী আমাদের ভূমিকা পরিবর্তন হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার মো. আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ডেরিভেটিভস পণ্য চালু হবে বলে আমি আশাবাদী। এরমধ্যে সিসিবিএল (সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড) তার কার্যক্রম শুরু করবে। শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাতে বাজার এ অবস্থায় থাকবে না। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে অনেক ভালো হবে। বাইরে থেকে কেউ এসে বাজার ভালো করে দেবে না। এখানে যারা আছে তাদেরই খুঁজে বের করতে হবে, এখানে কী সমস্যা আছে, আর কী কাজ করা যায়। তাহলেই বাজার ভালো হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আয়োজিত ‘ফিন্যান্সিয়াল ডেরিভেটিভস অব এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড প্ল্যাটফর্মণ্ডএম’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিবিএর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), সিডিবিএল, সিসিবিএল, মার্চেন্ট ব্যাংক এবং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীদের অংশগ্রহণে গাজীপুরের ব্র্যাক সিডিএমে দুই দিনব্যাপী (২ থেকে ৩ মে) এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। আব্দুল হালিম বলেন, ডেরিভেটিভস নিয়ে আজকের ওয়ার্কশপই শেষ নয়। এটা নিয়ে আরো অনেক প্রোগ্রাম করতে হবে। বিশ্বের অনেকে দেশে এ বিষয়ে অনেক আগে থেকে চালু আছে। তাই যারা এ বিষয় নিয়ে কাজ করবেন তাদের প্রয়োজনে সেসব দেশ থেকে শিক্ষা নিয়ে আসতে হবে। শুধু ইক্যুইটি দিয়ে মার্কেট বড় হবে না। মার্কেট বড় করতে আরো বিভিন্ন ধরনের পণ্য দরকার। সিসিবিএলের কিছুটা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এরই মধ্যে ডেরিভেটিভস নিয়ে কাজ শুরু করেছে এবং সিএসই কমোডেটিজ নিয়ে কাজ করছে। সিএসই কমোডেটিজ ২০২৪ সালের অক্টোবরের মধ্যে চালু করার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। তিনি বলেন, গতানুগতিক চিন্তা করলে হবে না। একটু ভিন্নভাবে ভাবতে হবে। বাজারে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে। শুধু করার জন্য ওয়ার্কশপ করলে হবে না। আপনাদের ভাবতে হবে আমরা এটা করব। সেক্ষেত্রে সিসিবিএলের সমস্যা দেখব না, সিসিবিএলের বড় শেয়ারহোল্ডার ডিএসই। প্রয়োজনে তাদের সমস্যার কথা জানান। দরকার হলে সেগুলো নিয়ে আলাদা ওয়ার্কশপ করেন। বিশেষ অতিথি ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, দেশের শেয়ারবাজারে পণ্যের ভিন্নতা আনতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো পিছিয়ে রয়েছে। তবে আজকের এ আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে ধন্যবাদ জানাই। এ বিষয়ে ডিএসইকেই এগিয়ে আসতে হবে। কারণ যদি ডিএসই কাজ না করে তাহলে বিএসইসি কিছুই করতে পারবে না। তিনি বলেন, পণ্যে ভিন্নতা আনতে অনেক আগে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসইর উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া। মূল প্রবন্ধে তিনি ডেরিভেটিভসের প্রকারভেদ, ডেরিভেটিভ মার্কেটের তাৎপর্য ও প্রভাব, বিশ্বব্যাপী ডেরিভেটিভস মার্কেট বৃদ্ধির কারণ, এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ডেরিভেটিভসের বৈশিষ্ট্য, ডেরিভেটিভস মার্কেটে সেটেলমেন্টের ধরন, ফরোয়ার্ড এবং ফিউচারের মধ্যে পার্থক্য, ফরোয়ার্ড কনট্রাক্টের সীমাবদ্ধতা, ফিউচার কনট্রাক্টের সীমাবদ্ধতা, ফিউচার ট্রেডিংয়ের বিভিন্ন টার্ম, ফিউচার কন্ট্রাক্টের স্পেসিফিকেশন, ফিউচার ও অপশনের মধ্যে পার্থক্য, অপশনস ট্রেডিংয়ের বিভিন্ন বিষয়, অপশন ট্রেডিংয়ের সুবিধা, অপশনের মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি, অপশন কন্ট্রান্টের স্পেসিফিকেশন, অপশন ট্রেডিং কৌশল, ডেরিভেটিভস ব্যবহার, হেজিং ও এর প্রকারভেদ, মৌলিক ঝুঁকি, ক্রস হেজ ও এর সঙ্গে যুক্ত ঝুঁকি, হেজিংয়ের সীমাবদ্ধতা, এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মে ফিউচারস অ্যান্ড অপশনস ট্রেডিংয়ে জড়িত পক্ষগুলো, ডেরিভেটিভস ট্রেডিং প্রক্রিয়া, ফিউচার ও অপশনের জন্য স্টক ও সূচক নির্বাচনের মানদ-, বিভিন্ন ধরনের করপোরেট অ্যাকশন ব্যবস্থাপনা, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট, মার্জিন ম্যানেজমেন্ট, ইনিশিয়াল মার্জিন, মেইনটেনেন্স মার্জিন ও মার্জিন কল, মার্জিনের পেমেন্ট, বিভিন্ন ধরনের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড সেটেলমেন্ট, সেটেলমেন্টের প্রক্রিয়া এবং সর্বোপরি এক্সচেঞ্জ ডেরিভেটিভস চালু করতে পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে আলোকপাত করেন।