আগামী মাসের মাঝামাঝিতে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে দেশে উদযাপিত হবে ঈদুল আজহা। এর আগে জুনের শুরুতে বসতে শুরু করবে কোরবানির পশুর হাট। এরই মধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে পশুর হাটের ইজারা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কোরবানির পশুর দাম কেমন হবে? বাড়বে না কমবে- তা নিয়ে সবার আগ্রহ থাকে। তবে কোরবানির পশুর দাম নিয়ে আশার কথা শোনাতে পারছেন না খামারিরা। তারা বলছেন, গো-খাদ্যের দাম বাড়াসহ নানা কারণে এবারের কোরবানির পশু দাম গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বাড়বে।
খামারিরা বলেছেন, গত কয়েক মাসে সব ধরনের গোখাদ্যের দাম কেজিতে ৭ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। গত ৪ মাসে প্রতি কেজি গমের ভুসিতে ৮ টাকা, বুটের খোসায় ১০, চালের খুদে ৭ টাকা দাম বেড়েছে। এছাড়া চালের খুদ ও দানাদার ফিডে ৮ থেকে ৯ টাকা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি খামারের গরু চিকিৎসা ব্যয়, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ পরিচালন ব্যয় বেড়েছে। যার কারণে এই বছর প্রতিটি গরুতে ২০ শতাংশ দাম বৃদ্ধি পাবে। দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে খামারে ঘুরতে আসা ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের আগ্রহ ছোট গরুর প্রতি বলেও জানা গেছে। রাজধানীর নারিন্দা এলাকায় অবস্থিত আবদুল মালেক অ্যাগ্রো ফার্ম। এই খামারে শতাধিক গরু দেখা গেছে। তবে, এবারের কোরবানিতে বিক্রির জন্য ৭০ থেকে ৮০টি গরু প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া গত কয়েক দিনে ৮ থেকে ১০টি গরু বিক্রি করা হয়েছে।
খামারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী ফেরদৌস সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আমাদের খামারে এক থেকে দেড় লাখ টাকার গরু রয়েছে। আবার ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার গরু রয়েছে। তবে, গত কয়েক দিনে খামারে যেসব ক্রেতা ও দর্শনার্থী এসেছেন, তাদের আগ্রহ ছোট গরুর প্রতি। কারণ, এবার প্রতিটি গরুতে ২০ শতাংশ দাম বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরো বলেন, আমাদের এখানে লাইভ ওয়েটে (ওজনে) গরু বিক্রি হয় না। আমরা আলোচনা করে গরুর সাইজ (বড়-ছোট) বিবেচনায় দরদাম করে বিক্রি করা হয়। আমাদের খামারে গরু-মহিষ মিলিয়ে ৭০ থেকে ৮০টি পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। প্রতি বছর এই সময় খামারে অনেক ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড় থাকতো, সেই তুলনায় এবার গরুর ক্রেতা কম। গত কয়েক মাসে প্রতিটি গো-খাদ্যে কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে বলেও দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের খামারে একটা গরু সংগ্রহ করার পর প্রথমে চিকিৎসক দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। কারণ, প্রতিটি প্রাণীর কিছু জটিল রোগ থাকে। আনার পর সেইসব রোগের চিকিৎসা করানো হয়। সেখানে চিকিৎসা ব্যয় বেড়েছে। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণে খামার পরিচালনা ব্যয়ও বেড়েছে। যার ফলে, এবার কোরবানিতে গরুর দাম বাড়বে। এবার দেশে কোরবানির দেওয়ার সংখ্যা কমবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে কাজী ফেরদৌস। তিনি বলেন, সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু মানুষের আয় তো বৃদ্ধি পায়নি।