ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে দেশের বাইরে বাংলাদেশিদের খরচ করার প্রবণতা বাড়ছে। গত ফ্রেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় মার্চে খরচ বেড়েছে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। তবে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে খরচ কমিয়েছে বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত মার্চ মাসে বাংলাদেশিরা বিদেশে গিয়ে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচ করেছে ৫০৩ কোটি টাকা। যেটা গত ফেব্রুয়ারি মাসে ছিল ৪৯৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে মার্চে বেড়েছে ৪ কোটি টাকা। এরমধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে খরচ করেছিলেন ১০৮ কোটি টাকা, মার্চে খরচ করেছে ১০৬ কোটি। সে হিসেবে ২ কোটি টাকা কম খরচ করেছেন বাংলাদেশিরা। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ভারতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশিরা ৯৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ করেন। যেখানে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে খরচ করেছিলেন ১১৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়াতি কিছুটা বাড়লেও মার্চে আবারও খরচ কমিয়েছেন বাংলাদেশিরা। তবে মার্চে খরচ বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। ফেব্রুয়ারিতে খরচ করেছিলেন ৬০ কোটি টাকা, মার্চে খরচ করেছেন ৬৩ কোটি। খরচ বেড়েছে প্রায় ৩ কোটি। এই দুই দেশের পর বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডের বেশি ব্যবহার করেছেন ইউএইতে ৪৯ কোটি। এছাড়া, থাইল্যান্ডে ৩৪ কোটি, যুক্তরাজ্যে ৩১ কোটি, সিঙ্গাপুরে ৩৩ কোটি, কানাডায় ২৫ কোটি, সৌদিতে ৩৫ কোটি, মালয়েশিয়ায় ১৯ কোটি, আয়ারল্যান্ডে ১৪ কোটি, অস্ট্রেলিয়ায় ১২ কোটি ও অন্যান্য দেশে ৬১ কোটি টাকা।
বিদেশে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশিরা যেসব খরচ করেছেন এর মধ্যে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে খরচ হয়েছে ১২১ কোটি, খুচরা দোকানে ৭৭ কোটি, নগদ উত্তোলন ৬০ কোটি, ফার্মেসিতে ৬৮ কোটি, কাপড় কেনায় ৪২ কোটি, পরিবহনে ৩৬ কোটি, ব্যবসায় সেবা বাবদ ৩৭ কোটি, সরকারি সেবায় ২২ কোটি, প্রফেশনাল সার্ভিস ২৩ কোটি ও ইউটিলিটি বাবদ ১১ কোটি টাকা। এদিকে চলতি বছরের মার্চ মাসে দেশের ভেতরে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন ফেব্রুয়ারি মাসের চেয়ে ১৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারিতে দেশের ভেতর ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা। আর মার্চ মাসে হয়েছে ২ হাজার ৯৮৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে মার্চে বেড়েছে ৪২৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে খরচ হয়েছে ১ হাজার ৩৮১ কোটি, খুচরা দোকানে ৩৯১ কোটি, ইউটিলিটি বাবদ ২৫১ কোটি, নগদ উত্তোলন ২০৩ কোটি, ফার্মেসিতে ১৪০ কোটি, কাপড় কেনায় ৩৪৪ কোটি, পরিবহনে ৯৮ কোটি, ফান্ড স্থানান্তর ৯৬ কোটি, বিজনেস সার্ভিস ৫২ কোটি, প্রফেশনাল সার্ভিস ১৯ কোটি ও সরকারি সেবায় ৯ কোটি টাকা। এছাড়া দেশের ভেতর গত জানুয়ারিতে ভিসা কার্ডের মাধ্যমে খরচ হয়েছে ২ হাজার ১২৬ কোটি টাকা। মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে খরচ হয়েছে ৫২৩ কোটি টাকা, অ্যামেক্সের মাধ্যমে খরচ হয়েছে ৩৩২ কোটি টাকা, ডিনার্সের মাধ্যমে খরচ হয়েছে ৩ কোটি টাকা, কিউক্যাশ প্রোপ্রাইটরের মধ্যে খরচ হয়েছে ১ কোটি টাকা। অন্যদিকে গত মার্চে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশিরা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচ করেছেন ২২৬ কোটি টাকা। এর আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে যেটা ছিল ২৪০ কোটি টাকা। বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে মার্কিন নাগরিকরা খরচ করেছেন ৫৬ কোটি টাকা, যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা খরচ করেছেন ২৬ কোটি, ভারতের নাগরিকরা খরচ করেছেন ২৩ কোটি, অস্ট্রলিয়ানরা খরচ করেছেন ৬ কোটি, কানাডার নাগরিকরা খরচ করেছেন ৮ কোটি, সিঙ্গাপুরের নাগরিকরা খরচ করেছেন ৮ কোটি, জাপানিরা খরচ করেছেন ৮ কোটি, ইউএই’র নাগরিকরা খরচ করেছেন ৭ কোটি, চীনারা খরচ করেছেন ৭ কোটি, দক্ষিণ কোরিয়ানরা খরচ করেছেন ৪ কোটি, সৌদি নাগরিকরা খরচ করেছেন ৩ কোটি, ইতালির নাগরিকরা খরচ করেছেন ৩ কোটি। অন্যান্য দেশের নাগরিকরা খরচ করেছেন ৫৩ কোটি টাকা।