টানা দরপতনের বৃত্তে আটকে গেছে দেশের শেয়ারবাজার। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকয়টি মূল্যসূচক কমেছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো। পাঁচ কার্যদিবসের এই পতনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক কমল ১৪৩ পয়েন্ট। রিজার্ভ কমে যাওয়ার সংবাদ, রিজার্ভ চুরি হওয়ার গুঞ্জন, আগামী অর্থবছরের বাজেটে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স আরোপের গুঞ্জন এবং দাম কমার সর্বোচ্চ সীমা ৩ শতাংশ বেঁধে দেওয়ার কারণে শেয়ারবাজারে এই টানা দরপতন হচ্ছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। সপ্তাহের প্রথম চার কার্যদিবস দরপতনের পর শেষ কার্যদিবস গতকাল বৃহস্পতিবার লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ে। এতে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। তবে লেনদেন শুরুর পর আধাঘণ্টা পার হওয়ার আগেই একশ্রেণির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান। ফলে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। এতে সূচকও ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই পতনের ধারা অব্যাহত থাকে। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১২২ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫ প্রতিষ্ঠানের। আর ৫৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫১৯ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক ৮০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২১২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৭৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এদিকে সবকয়টি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কিছুটা বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৭৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫২৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ১৫০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকার। ৩০ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ই-জেনারেশন। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস, ফারইস্ট নিটিং, ওরিয়ন ইনফিউশন, বিচ হ্যাচারি, প্রগতী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী আঁশ এবং গোল্ডেন সন।