বাংলাদেশে চীনা পণ্যের ব্যবসা রমরমা!
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশে চীনা পণ্যের ব্যবসা এতটাই রমরমা যে, তাতে মোটামুটিভাবে বাজার দেশটির দখলে বললেও ভুল হবে না। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চীনা পণ্যের তুলনায় বহু অংশে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চীনা পণ্য হটিয়ে বাজার দখল করছে বাংলাদেশি পণ্য। যেমন ক্যানভাস, পেপার হোল্ডার, টি-স্কেল ইত্যাদি। কিছুদিন আগেও এসব পণ্য চীন থেকে আসত।
কিন্তু এখন এগুলো রাজধানী ঢাকাতেই তৈরি হয়। বিশেষ করে নিউমার্কেট-নীলক্ষেত এলাকায়। দেশে এসব পণ্য উৎপাদনের ফলে খরচও অনেক কমে গেছে।
যেমন আগে দশ বাই দশ একটি ক্যানভাস বিক্রি হতো ৪০০ টাকায়। কিন্তু এখন দশ বাই দশ একটি ক্যানভাস বিক্রি হয় মাত্র ৪৫ টাকায়। আগে যে হোল্ডার ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা ছিল এখন তা বিক্রি হয় মাত্র ২২০ টাকায়। টি-স্কেল ছিল ২২০ টাকা কিন্তু দেশে উৎপাদনের ফলে এখন ১২০ টাকায় বিক্রি করা হয়। এছাড়া আরও এ রকম অনেক পণ্য আছে।
যারা আর্টিসস্ট, যারা ড্রয়িং করে তারা সবচেয়ে বেশি ক্যানভাস কিনে। টি-স্কেল, পেপার হোল্ডার বেশি কিনে যারা পলিটেকনিকে এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ে।
ক্যানভাস তৈরির ক্ষেত্রে প্রথমে কাট সাইজ করা হয়, এরপর কাপড় লাগিয়ে পিন মারা হয়। সবশেষ রং করে রেখে দেওয়া হয়। এসব রং শুকাতে কখনো কখনো ৫ থেকে ৬ দিন সময় লাগে। রং শুকানোর পর বিক্রি করা হয়। এরপর সব সরঞ্জাম সংগ্রহ হয়ে গেলে ছবি আঁকা হয়। ছোট বড় সাইজের এসব ক্যানভাসে প্রাকৃতিক দৃশ্য, বিখ্যাত পেইন্টিং, কোনো পুরোনো ফটোগ্রাফ, এমনকি মানুষের ছবিও আঁকা হয়।
মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে আসবাবপত্রের বাজারের একটি বড় অংশ চীনের পণ্যের দখলে। বাংলাদেশে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করে আনা হয় তার তুলনায় খুব সামান্যই রপ্তানি হয় চীনে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের মূল সমস্যা দক্ষ জনশক্তি ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাব। সেইসঙ্গে অবকাঠামোগত অসুবিধাও রয়েছে। যার কারণে চীনের সঙ্গে এই বিশাল ভারসাম্যহীনতা। চীনে এখন শ্রমের মূল্য বাড়ছে। ফলে তারা বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে এগিয়ে আসছে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে। বাংলাদেশের এই সুযোগটি কাজে লাগানো দরকার।
নিজ দেশের সাধারণ মানুষের জন্য তৈরি পোশাক পণ্য উৎপাদন থেকে সরে আসছে চীন। সেখানেও বাংলাদেশের সামনে সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আর যেহেতু বাংলাদেশের মোটামুটি সব পণ্যেই চীন শুল্ক সুবিধা দিয়ে থাকে, তাই চামড়াজাত শিল্প এবং জুতার বাজার হতে পারে বাংলাদেশের জন্য চীনে একটি লাভজনক ক্ষেত্র।