চামড়াজাত পণ্যে বিশেষ প্রণোদনার পরিকল্পনা

সুবিধা কমবে তৈরি পোশাকে

প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্তমান সরকার চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশেষ জোর দিচ্ছে। আর সেই বিবেচনায় নিজস্ব কারখানায় উৎপাদিত চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশেষ প্রণোদনা দিতে যাচ্ছে। লক্ষ্য তৈরি পোশাকের পাশাপাশি চামড়াজাত পণ্য থেকে বড় আকারের বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ করা। যদিও আইএমএফের পরামর্শ হচ্ছে, কর অব্যাহতি কমিয়ে আনা। আইএমএফের পরামর্শ ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকার চামড়াজাত শিল্পে নগদ প্রণোদনা দেওয়ার পরিধি বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে। একই সঙ্গে তৈরি পোশাক, ক্ষুদ্রঋণ, রেমিট্যান্স, পোলট্রি, মৎস্য ও রপ্তানির নগদ প্রণোদনা এবং আইটি পরিষেবার মতো খাতে কর অব্যাহতি হ্রাস করার পরিকল্পনা নিয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী অর্থবছরের বাজেটে কমপক্ষে ১২-১৫ হাজার কোটি টাকার কর অব্যাহতি পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এক হিসাব অনুযায়ী কর অব্যাহতির পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। সেখান থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা যদি কমানো সম্ভব হয় তাহলে কর অব্যাহতির পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। এ বিষয়ে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, চামড়াজাত সামগ্রী রপ্তানিতে উৎসাহিত করতে সরকার ২০০০ সাল থেকে প্রণোদনা দিয়ে আসছে। এসব পণ্য রপ্তানির বিপরীতে ১২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। যদিও এ সুবিধা পেতে প্রতিষ্ঠানকে শতভাগ রপ্তানি শিল্প হতে হয়। তবে আসছে বাজেটে সেটা শিথিল করে দেশীয় যে কোনো ধরনের প্রতিষ্ঠান চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে ওই প্রণোদনা পেতে পারে। তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তের বিষয়টি মাথায় রেখে কর অব্যাহতির পরিমাণ কমানো শুরু করেছে। তৈরি পোশাক, ক্ষুদ্রঋণ, রেমিট্যান্স, পোলট্রি, মৎস্য, রপ্তানির নগদ প্রণোদনা কর অব্যাহতি হ্রাস করা হতে পারে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে কর অব্যাহতি হ্রাস করে জিডিপির ২ শতাংশের নিচে নামানোর লক্ষ্য রয়েছে।

যেসব খাতে মিলছে কর অব্যাহতি : কর অব্যাহতি বা কর সুবিধা বলতে কর রেয়াত, হ্রাসকৃত হারে কর প্রদান ও নগদ প্রণোদনাকে বোঝানো হয়। বর্তমানে ১০২টি খাতে আংশিক বা সম্পূর্ণ কর অব্যাহতি আছে। এর মধ্যে ৪০টি খাতে ব্যক্তি করদাতাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলোতে আংশিক বা পুরোপুরি অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে কোম্পানি, শিল্প বা বিনিয়োগের জন্য। রেমিট্যান্স, বেতন, শেয়ারের মূলধনি আয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইটেক পার্ক, ডিভিডেন্ড, কৃষি ব্যবসা, সঞ্চয়পত্রের সুদ, সম্পদ হস্তান্তর বা বিক্রি থেকে অর্জিত আয়, রপ্তানি খাতসমূহ, তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষাসহ বর্তমানে প্রায় শতাধিক খাত কর অব্যাহতির সুবিধা পাচ্ছে। যা বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত ৭ শতাংশের বেশি। আইএমএফের পরামর্শ অনুযায়ী ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির শর্তগুলোর মধ্যে কর ব্যয়কেও যৌক্তিকীকরণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গত এপ্রিল মাসে ঢাকা সফর করে আইএমএফ প্রতিনিধি দল। তাদের সঙ্গে এনবিআর কর্মকর্তাদের এক সভার পরে কর অব্যাহতি কমানো বা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছিল।