বাজেটে চার বাধা চিহ্নিত

রপ্তানিকারক সমিতির ২৪ প্রস্তাব

প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে চার ‘বাধা’ দেখছে দেশের রপ্তানিকারক সমিতি (ইএবি)। তাদের চিহ্নিত বাধা চারটি হলো- স্টিল বিল্ডিং তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের নির্মাণসামগ্রীর ওপর আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব; অর্থনৈতিক অঞ্চলে অবস্থিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মূলধনী যন্ত্রাংশ ও নির্মাণসামগ্রীর আমদানি শুল্ক ১ শতাংশ নির্ধারণ; জ্বালানি সাশ্রয়ী বাতির ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশের প্রস্তাব করা এবং নতুন বন্ড লাইসেন্স ফি পঞ্চাশ হাজার টাকার স্থলে এক লাখ টাকা ও লাইসেন্স নবায়ন ফি বার্ষিক পাঁচ হাজার টাকার স্থলে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব। এ চার প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে দেশে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাধা তৈরি হবে বলে মনে করছে সংগঠনটি। ইএবি সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী এক বিবৃতিতে এ অভিমত তুলে ধরেন।

রপ্তানিকারক সমিতি বলছে, গত অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি ছিল ৪৭ বিলিয়ন ডলার, ২০৩০ সাল নাগাদ আমরা ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছি। সরকারের অব্যাহত সহযোগিতায় আমরা রপ্তানি বাড়াতে পারলে কর হার না বাড়িয়েও রাজস্ব বাড়ানো সম্ভব। এতে অর্থনীতি বেশি উপকৃত হবে। এজন্য ২০২৯ সাল পর্যন্ত পোশাক ও বস্ত্র খাতের চলমান সব নীতিসহায়তা অব্যাহত রাখা এবং বিকল্প নীতিসহায়তা প্রবর্তন না করা পর্যন্ত যেন চলমান নীতিসহায়তা কাটছাঁট না করা হয়, সে দাবি রাখছি।

বিবৃতিতে ২৪টি প্রস্তাব তুলে ধরে ইএবি। এর মধ্যে রয়েছে উৎসে কর ০.৫ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং এটিকে চূড়ান্ত করদায় হিসেবে গণ্য করা এবং আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত অব্যাহত রাখা; রপ্তানি খাতে নীতি সহায়তার ওপর আয়কর অব্যাহতি; শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সব পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট ও পরোক্ষ ট্যাক্স প্রত্যাহার করতে হবে; ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর বিকল্প সহায়তার ব্যবস্থা করা; এইচ এস কোর্ড ও ওজন সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করা; অগ্নি ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম পুনঃস্থাপনের ক্ষেত্রে আমদানির ওপর কর রেয়াত; পোশাক শিল্পের ঝুট বা বর্জ্য সংগ্রহের ওপর ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা এবং রিসাইকেল ফাইবার সরবরাহের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা উল্লখেযোগ্য।

মাংস প্রক্রিয়াজাত করা ও রপ্তানি : মাংস প্রক্রিয়াজাত এবং রপ্তানি প্রসারের জন্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- মাংস রপ্তানিতে ফ্রিজার ভ্যান এবং চিলার ভ্যান অপরিহার্য বিধায় এগুলিকে আমদানির ক্ষেত্রে মূলধনী পণ্য হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে শুল্ক অব্যাহতি দিয়ে মাংস রপ্তানিতে বিশ্ববাজারে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা এবং বিভিন্ন ধরনের মসলা ও প্যাকেজিং পণ্য আমদানি নির্ভর বিধায় উপর্যুক্ত উপকরণ আমদানিতে শুল্ক সুবিধা দেওয়া।

হিমায়তি ও নন-হিমায়িত পণ্য : হিমায়তি ও নন-হিমায়িত পণ্য রপ্তানির জন্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- হিমায়িত চিংড়িতে ১০ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা প্রদান, একই সঙ্গে হিমায়িত মাছ রপ্তানিতে নগদ সহায়তা ৫ থেকে ১০ শতাংশে উন্নীত করা।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য : চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রস্তাবে আছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য; পাট ও পাটজাত পণ্য এবং কৃষিজাত পণ্য এই তিনটি খাতকে সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে চিহ্নিত করে এই খাতের বিকাশে নীতি সহায়তা প্রদান এবং দেশে চামড়ার জুতা, সিনথেটিক ও ফেব্রিকসের তৈরি জুতার জন্য প্রয়োজনীয় সংযোগশিল্প তৈরি করা। এ ছাড়া ছোট উদ্যোক্তাদের জন্য সাধারণ বন্ডেড ওয়্যার হাউস স্থাপন ও অগ্নিনিরাপত্তা সরঞ্জাম আমদানিতে শুল্ক হার কমানো।

বাইসাইকেল রপ্তানি : ইএবির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০৩০ সাল নাগাদ ইউরোপ প্রতিবছর রপ্তানিকারক দেশগুলি থেকে তিন কোটি সাইকেল আমদানি করবে। ইউরোপের আমদানি লক্ষ্যমাত্রা ধরতে হলে বাইসাইকেলের কাচামাল আমদানি সহজ করতে হবে এবং দেশীয় কাঁচামাল উৎপাদনে নীতি সহায়তা দিতে হবে।