বৈশ্বিক অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশেও বাড়ছে সুদহার। ব্যাংকের ঋণের কিস্তির টাকার পরিমাণও বেড়ে গেছে। এতে করে অনেক গ্রাহক ঋণের কিস্তি পরিশোধে সমস্যায় পড়ছেন। এমন পরিস্থিতিতে মেয়াদি শিল্প ও গৃহনির্মাণ ঋণের কিস্তির টাকার অঙ্ক না বাড়িয়ে কিস্তির সংখ্যা বাড়িয়ে বাড়তি সুদ আদায় করবে ব্যাংকগুলো। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, বিদ্যমান বৈশ্বিক বিরূপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ব্যাংকের ঋণের সুদহার বেড়েছে। ফলে শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং ব্যক্তিক পর্যায়ে গৃহনির্মাণ ঋণ গ্রহীতাদের ঋণের কিস্তির টাকার অঙ্ক বেড়েছে, যার কারণে কিস্তি প্রদানে গ্রাহকরা সমস্যার পড়ছেন। শিল্পায়ন ও রপ্তানির গতিধারা অক্ষুণ্ণ রাখা এবং সীমিত আয়ের ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পরিশোধে সক্ষমতা বজায় রেখে বিদ্যমান মেয়াদি শিল্প ঋণ ও গৃহনির্মাণ ঋণের কিস্তির পরিমাণ না বাড়িয়ে মেয়াদ পুনর্বিন্যাস করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে বলা হয়েছে।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১ জুলাইয়ের আগে ব্যাংকগুলোর নির্ধারিত কিস্তির পরিমাণ অপরিবর্তিত রেখে ঋণের কিস্তি আদায় করবে। কিস্তি আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলেও এসব ঋণ পুনর্গঠন হিসেবে গণ্য হবে না। বেতনভোগী চাকরিজীবীদের বেতনের বিপরীতে গৃহীত ঋণের ক্ষেত্রে ওই গ্রাহকের চাকরি হতে অবসর গ্রহণের সময়সীমার মধ্যে ব্যাংক তাদের নিজস্ব বিবেচনায় ঋণের অর্থ পরিশোধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
২০২৪ সালের ৩১ মার্চ প্রান্তিকে খেলাপি হয়নি এমন গ্রাহক এ সুবিধার পাবেন। কোনো রূপান্তরিত মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে এ সুবিধা প্রযোজ্য হবে না এবং বাংলাদেশ ব্যাংক বা সরকারের কোনো প্রণোদনা প্যাকেজ বা বিশেষ তহবিলের আওতায় দেওয়া ঋণ এ সুবিধা পাবে না।
ব্যাংকগুলো এ সুবিধা প্রাপ্তির যোগ্য সব ঋণ গ্রহীতাকে এ বিষয়ে তথ্য জানাতে হবে। এ সুবিধা নিতে ইচ্ছুক ঋণগ্রহীতাকে ব্যাংকে লিখিত আবেদন করতে হবে। ঋণগ্রহীতার আবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে এ সুবিধা প্রদান করতে হবে। ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো তাদের প্রদত্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উল্লিখিত নির্দেশনা অনুসরণকরত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ সার্কুলার জারির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে জারি করা বিআরপিডি সার্কুলার লেটার নং-১৭ এর নির্দেশনা রহিত করা হলো-জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।