২০২১ সালের আগস্টে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ সর্বোচ্চ চার হাজার ৮০০ কোটি ডলার বা ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। আর সদ্য বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৬৮২ কোটি বা ২৬ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলারে। যেখানে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ আরো কম। এতদিন বাংলাদেশ ব্যাংক এ হিসাবটি গোপন করে আসছিল। তবে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের হিসাব প্রকাশ না করলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফকে সেটি দেওয়া হতো।
দেশের প্রকৃত রিজার্ভ নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলেও নিশ্চুপ ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হলো, বর্তমানে দেশে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ ১৬ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি (বিপিএমণ্ড৬) অনুযায়ী রিজার্ভ এখন দুই হাজার ১৮৪ কোটি ডলার বা ২১ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে আইএমএফের নানা শর্ত মেনে আন্তর্জাতিক সংস্থাটির ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তি বাবদ ১ দশমিক ১১৫ বিলিয়ন ডলার বা ১১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড় করা হয়। আইএমএফের ঋণের পাশাপাশি আরও কয়েকটি দাতা সংস্থার ঋণ মেলে গত কয়েক দিনে। এর ফলে অতিরিক্ত ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ আসায় ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, আইএমএফের ঋণ সহায়তাসহ দাতা সংস্থার অর্থ পাওয়ার পর দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ বেড়েছে। চলতি বছরের ৩০ জুন শেষে দেশের নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ এখন এক হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার বা ১৬ বিলিয়ন ডলার। বিপিএমণ্ড৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন দুই হাজার ১৮৪ কোটি ডলার বা ২১ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার। অর্থনীতির অন্যতম সূচক হলো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। যে কোনো দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের রিজার্ভ থাকলে সেটিকে খুব খারাপ অবস্থা বলা যায় না। বর্তমানে দেশের আমদানি ব্যয় মেটাতে প্রতি মাসে ব্যয় হচ্ছে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে এ রিজার্ভ দিয়ে দেশের তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।