টানা তিন কার্যদিবস পতনের পর গত সোমবার দেশের শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিললেও গতকাল মঙ্গলবার এসে আবার দরপতন হয়েছে। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের গতি। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) নয় কার্যদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। তবে বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ার কারণে বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে সূচক। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম কমার তালিকায়। তবে ব্যাংক কোম্পানিগুলোর কল্যাণে এ বাজারটিতেও সূচকের বড় পতন হয়নি। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের পরও এ বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় লেনদেনের ১৩ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ২৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে এরপরেই একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমতে থাকে। গড়পড়তা সব খাতের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩০ পয়েন্ট কমে যায়। এমন পরিস্থিতিতে দুপুর ১২টার পর পতন থেকে বেরিয়ে আসতে থাকে ব্যাংক কোম্পানিগুলো। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। ফলে দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তারিকায় প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান থাকলেও সূচকের বড় পতন হয়নি।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১২১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২২১টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৫৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অন্যদিকে ব্যাংক খাতের ২৪টি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে এবং মাত্র একটি ব্যাংকের শেয়ার দাম কমেছে।
ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ায় অধিকাংশ সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পরও ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৪৮৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২০১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৬১ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
এদিকে দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৬৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬৬২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৯৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত ৩ জুলাইয়ের পর ডিএসইতে সব থেকে কম লেনদেন হলো।
এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ডিবিএইচ ফাইন্যান্সের ২০ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এনআরবি ব্যাংক, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, স্যালভো কেমিক্যাল, ফারই্ট নিটিং, ইস্টার্ন ব্যাংক, জেমিনি সি ফুড এবং গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৯টির এবং ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা।