বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড (বাপবিবো)-এর বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ) জন্য ৭২ হাজার ৮৯৭টি এসপিসি বৈদ্যুতিক পোল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ২২৭ কোটি ৯৪ লাখ ৭০ হাজার ১৯৩ টাকা।
‘বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ডের (বাপবিবো) বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় তিনটি পৃথক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে এই পোল কেনার অনুমোদ দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রটি জানিয়েছে, বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বাপবিবো বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধনের লক্ষ্যে এসপিসি পোল কেনার প্রস্তাব উপস্থান করা হয়। তিনটি প্রস্তাবই আলোচনার মাধ্যমে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি। এর মধ্যে লট-১ এর আওতায় ২৪ হাজার ৩০০টি এসপিসি পোল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেডের কাছ থেকে এই পোল কেনা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৭৬ কোটি ৬৮ লাখ ১১ হাজার ৮৭৭ টাকা। জানা গেছে, লট-১ এর আওতায় ২৪ হাজার ৩০০টি এসপিসি পোল ক্রয়ের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে তিনটি প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেয়। বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড ৭৬ কোটি ৬৮ লাখ ১১ হাজার ৮৭৭ টাকা, কনফিডেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ৭৭ কোটি ৯৫ লাখ ২৩ হাজার ৭৯৭ টাকা এবং দাদা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ও রয়্যাল গ্রীণ প্রডাক্টস লিমিটেড অ্যান্ড পাশা পোলস লিমিটেড ৭৯ কোটি ৯৩ লাখ ২ হাজার ৪১৩ টাকা দর উল্লেখ করে। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেডের নাম সুপারিশ করে। দ্বিতীয় প্রস্তাবে লট-২ এর আওতায় ২৪ হাজার ৩০০টি পোল কেনার প্রস্তাব উপস্থান করা হলে তাও অনুমোদ দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি। এই পোল কিনতে মোট ব্যয় হবে ৭৬ কোটি ৬৫ লাখ ১ হাজার ৩৭২ টাকা। চরকা এসপিসি পোলস মিলিটেড জেভি, দাদা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, টিএসসিও পাওয়ার লিমিটেড এবং পাশা পোলস লিমিটেড থেকে এই পোল কেনা হবে।
জানা গেছে, লট-২ এর আওতায় ২৪ হাজার ৩০০টি পোল ক্রয়ের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে তিনটি প্রতিষ্ঠান সাড়া দেয়। এর মধ্যে চরকা এসপিসি পোলস এবং দাদা ইঞ্জিনিয়ারিং, টিএসসিও পাওয়ার লিমিটেড এবং পাশা পোলস লিমিটেড ৭৬ কোটি ৬৫ লাখ ১ হাজার ৩৭২ টাকা, বিএ-টি পোলস ও কনটেক কন্সট্রাকশন ৭৭ কোটি ৪৯ লাখ ১৮ হাজার ৫৯৯ টাকা এবং বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড ৭৯ কোটি ৬৫ লাখ ১১ হাজার ৬২৫ টাকা দর উল্লেখ করে। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে চরকা এসপিসি পোলস, দাদা ইঞ্জিনিয়ারিং, টিএসসিও পাওয়ার লিমিটেড এবং পাশা পোলস লিমিটেডের নাম সুপারিশ করে।
বিদ্যুৎ বিভাগের অপর প্রস্তাবে লট-৩-এর আওতায় ২৪ হাজার ২৯৭টি এসপিসি পোল কেনার অনুমোদন চাওয়া হয়। মন্ত্রিসভা কমিটি ৭৬ কোটি ৬১ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪৩ টাকায় এই পোল কেনার অনুমোদ দিয়েছে। পোলস অ্যান্ড কনক্রিট লিমিটেড, কনটেক কন্সট্রাকশন লিমিটেড, রয়্যাল গ্রীণ প্রডাক্টস লিমিটেড এবং শেলটেক টেকনোলজির কাছ থেকে এই পোল কেনা হবে।
জানা গেছে, লট-৩ এর আওতায় ২৪ হাজার ২৯৭টি পোলের জন্য দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে তিনটি প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেয়। এর মধ্যে যৌথভাবে পোলস অ্যান্ড কনক্রিট লিমিটেড, কনটেক কন্সট্রাকশন লিমিটেড, রয়্যাল গ্রীণ প্রডাক্টস লিমিটেড এবং শেলটেক টেকনোলজি ৭৬ কোটি ৬১ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪৩ টাকা, ক্যাসেল কন্সট্রাকশন লিমিটেড ৭৭ কোটি ৬৭ লাখ ৭৩ হাজার ৩৪১ টাকা এবং যৌথভাবে টিএসসিও পাওয়ার লিমিটেড, একতা পোল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং ভিকার কনক্রিট প্রডাক্টস ৭৯ কোটি ৪৭ লাখ ১৭ হাজার ৬৫৭ টাকা দর উল্লেখ করে। দরপত্র মূলায়ন কমিটি সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে পোলস অ্যান্ড কনক্রিট লিমিটেড, কনটেক কন্সট্রাকশন লিমিটেড, রয়্যাল গ্রীণ প্রডাক্টস লিমিটেড এবং শেলটেক টেকনোলজির নাম সুপারিশ করে। জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে মোট ৩ হাজার ৭৬ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের প্রকল্পটি ২০২১ সালের ৪ মে তারিখে একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির নির্ধারিত মেয়াদ ২০২১ সালের ৩০ জুন থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।
বাপবিবো’র আওতায় ৯টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (বাগেরহাট, যশোর-১, যশোর-২, ঝিনাইদহ, খুলনা, কুষ্টিয়া, মাগুরা, মেহেরপুর ও সাতক্ষীরা) এলাকায় পল্লী বিদ্যুতায়ন নেটওয়ার্কের আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন, ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো, নিরবচ্ছিন্ন ও গুণগত মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।