উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে গতকাল রোববার দেশের শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। ঢালাও দরপতন হওয়ায় প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া ৯৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম কমার তালিকায়। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে লেনদেন খরা। ডিএসইতে লেনদেন কমে ২০০ কোটি টাকার ঘরে নেমেছে। প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ১০০ পয়েন্টের ওপরে।
অন্য শেয়ার বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় রয়েছে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। ফলে মূল্যসূচকের বড়পতন হয়েছে বাজারটিতেও। সেই সঙ্গে ক্রেতা সংকটে ছিল লেনদেন খরা।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। আন্দোলনকারীরা গত শুক্রবার সরকারপতনের এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সেই সঙ্গে অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের আশঙ্কা আগে থেকেই ভর করেছিল জনমনে।
এমন পরিস্থিতিতেও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেই রোববার নির্ধারিত সময় সকাল ১০টায় শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়। তবে শুরুতেই দাম কমার তালিকায় নাম লেখায় লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠান। এতে শুরুতেই সূচকের বড় পতন হয়। সেই ক্রেতা সংকট দেখা দেয় সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের। লেনদেনের পুরো সময়জুড়ে এ অবস্থা বিরাজ করে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৯৪ শতাংশ বা ৩৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম কমার তালিকায়। বিপরীতে দাম বেড়েছে ৬টি প্রতিষ্ঠানের। আর ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১০৪ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৪৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৫৯ পয়েন্টে নেমে গেছে।
সূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২০৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৫২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৩৪৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ারের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা হাইডেল বার্গ সিমেন্টের ১৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, গ্রামীণফোন, টেকনো ড্রাগস, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, মিডল্যান্ড ব্যাংক এবং শ্যামপুর সুগার মিল। অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৯৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৭৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৪টির এবং ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৩৮ কোটি ৭ লাখ টাকা।