বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং কারফিউ জারিকে ঘিরে গত কয়েক দিন সারা দেশে পণ্য পরিবহনব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়ে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গিয়েছিল। দুই-তিন দিন ধরে আবার সরবরাহব্যবস্থা সচল। প্রথমদিকে মাছ, মুরগি, সবজির পর এবার ডিমের দামও কমতে শুরু করেছে। অন্যদিকে চাল, পেঁয়াজ, রসুন এখনো আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে তদারকি শুরু হলে শিগগির সব ধরনের পণ্যের দামই কমে আসবে বলে জানান বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলো চাঁদাবাজমুক্ত করতে শিক্ষার্থীরা বাজারগুলোতে অভিযান শুরু করেছেন। তারা বাজারে গিয়ে বিক্রেতাদের বোঝাচ্ছেন যাতে তারা কাউকে কোনো চাঁদা না দেন। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা কালের কণ্ঠকে বলেন, চাঁদাবাজদের কারণেই বাজারে পণ্যের দাম কমছে না। গতকাল কারওয়ান বাজার, বাড্ডা ও রামপুরা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ছাত্র আন্দোলনের প্রভাবে বাজারে যেসব নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছিল, এরই মধ্যে তা কমতে শুরু হয়েছে। আন্দোলনের সময় ফার্মের ডিমের ডজন ১৭০ টাকায় উঠেছিল, এখন সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায় নেমেছে। ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গত তিন-চার দিন আগেও ২০০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হয়। সোনালি মুরগি প্রতি কেজি তে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছ কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমে দেড় কেজি ওজনের রুই মাছ প্রতি কেজি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকায়, আড়াই কেজি ওজনের রুই মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম কমে প্রতি কেজি পাঙ্গাস সাইজভেদে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় এবং তেলাপিয়া মাছ প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৪০০ টাকা পর্যন্ত উঠলেও এখন ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় নেমে এসেছে। বেগুন প্রতি কেজি মানভেদে ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত কয়েক দিন আগেও মানভেদে ৮০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এ ছাড়া কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে করলা, ঢেঁড়শ, চিচিঙ্গা, পটোল, ধুন্দল, টমেটো, পেঁপের। এ ছাড়া লাউ প্রতি পিস ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চালকুমড়া প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, কচুমুখী কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর অন্যান্য খুচরা বাজারের তুলনায় কারওয়ান বাজারে পণ্যের দাম আরো কম। কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘গত মঙ্গলবার থেকে পণ্য নিয়ে ঢাকার বাইরের গাড়িগুলো আসতেছে। এতে সব ধরনের পণ্যের দাম কমতে শুরু হয়েছে।’