বিদেশ থেকে পেট্রোলিয়াম জ্বালানি ও গ্যাস আমদানি অব্যাহত রাখতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কর্মকর্তারা জানান, বিদেশি গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম সরবরাহকারীদের পাওনা পরিশোধের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আরো বৈদেশিক মুদ্রা সহায়তা পাচ্ছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। জ্বালানি সচিব নুরুল আলম একটি গনমাধ্যমকে বলেন, আগে আমরা বিদেশি কোম্পানিকে গ্যাস ও পেট্রোলিয়ামের বিল পরিশোধ করার জন্য প্রতি সপ্তাহে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার পেয়ে আসছি। এখন আমরা সেই পরিমাণের চেয়ে বেশি পাচ্ছি। সম্প্রতি বিদেশি গ্যাস ও জ্বালানি সরবরাহকারীদের সঙ্গে সরকারের বকেয়া বিল ৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে জ্বালানি সচিব এমন মন্তব্য করলেন। সাম্প্রতিক নগদ অর্থ, বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহের ক্ষেত্রে পেট্রোলিয়াম জ্বালানি ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি এবং বিদেশি কোম্পানির পরিচালিত স্থানীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস কেনার ক্ষেত্রে এক প্রকার অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, গ্যাস কেনার জন্য পেট্রোলিয়াম আমদানির দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) পাওনা ২২ কোটি ডলার এবং শেভরন বাংলাদেশেসহ বিদেশি কোম্পানির কাছে গ্যাস ক্রয়ের জন্য পেট্রোবাংলার পরিশোধ করতে হবে ২৮ কোটি ডলার। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সরবরাহকারীদের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান বৈঠক করায় কর পরিশোধ পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন নুরুল আলম। তিনি বলেন, আমরা আশা করি, বিদেশ থেকে পেট্রোলিয়াম ও এলএনজি আমদানি অব্যাহত রাখা এবং স্থানীয়ভাবে পরিচালিত বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে গ্যাস কেনায় কোনো সমস্যা হবে না। বাংলাদেশকে প্রতি বছর সাড়ে ৬ থেকে ৭ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে পৃথক বার্ষিক চুক্তির আওতায় আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সাড়ে ৬ মিলিয়ন টন বিভিন্ন পেট্রোলিয়াম জ্বালানি আমদানি করতে হয়। এর মধ্যে কাতার গ্যাস, ওমান ট্রেডিং এবং স্পট মার্কেট থেকে ৪ দশমিক ৫৫৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে এলএনজি (৫ দশমিক শূন্য ৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন) আমদানি করতে হয়। এ ছাড়া বর্তমানে বিভিন্ন বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পরিশোধ করতে হয়। যার পরিমাণ ৪ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ২০২২ সালে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসার পর পেট্রোলিয়াম জ্বালানি ও এলএনজি আমদানি চাপের মুখে পড়ে। ফলে গত বছরের কিছু সময়ের জন্য এলএনজি আমদানি কমাতে হয় সরকারকে।