চট্টগ্রামবন্দরে ৯ ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা
প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
এস আলম গ্রুপের মালিকানা থাকা ৬টিসহ মোট ৯টি ব্যাংকের চেক, পে-অর্ডার ও ব্যাংক গ্যারান্টি সেবা বন্ধের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চট্টগ্রামবন্দর কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুস শাকুর এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেন। গতকাল শনিবার সকালে তথ্যটি নিশ্চিত করেন সংস্থাটির সচিব ওমর ফারুক।
ব্যাংকগুলো হলো, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামী ব্যাংক। সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক এসব ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের লিখিত আদেশে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ৯টি ব্যাংকের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের লেনদেন স্বাভাবিক নিয়মে চলছে না। এসব ব্যাংক থেকে পূর্বের মেয়াদি আমানতসহ বিভিন্ন আমানত উত্তোলন করতে পারছে না বন্দর। ফলে এসব ব্যাংকে নতুন করে সব ধরনের লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বন্দর কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা দেয়া ৯ ব্যাংকের গ্রাহকরা গত দুই সপ্তাহ ধরে অনলাইনে শুল্ক কর পরিশোধ করতে পারছিলেন না। সেই সঙ্গে এসব ব্যাংকের পে-অর্ডারও ফিরিয়ে দেয় অনেক শিপিং এজেন্ট। এমনকি অন্য ব্যাংকে ফান্ড (তহবিল) স্থানান্তর করতেও অসুবিধায় পড়েন আমদানিকারকরা। তাই বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি নিতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। চট্টগ্রামবন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নেয়ার অধিকার সকল আমানতকারীর রয়েছে। ব্যাংকে বিনিয়োগ করার বিপরীতে ইন্টারেস্ট না পাওয়ায় বন্দর আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
যেসব ব্যাংক থেকে ইন্টারেস্ট পাওয়া যাচ্ছে না, সেই ব্যাংকগুলোকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা তাদের কোনো রেসপন্সও পাইনি, যা ব্যাংকিংসুলভ আচরণ পরিপন্থি। তিনি বলেন, দুর্বল ও সমস্যাযুক্ত ব্যাংকগুলোতে আমানত রাখতে নিরাপদ বোধ না করায় আমরা টাকা তুলে নিতে চাচ্ছি। কিন্তু তাও সম্ভব হচ্ছে না।
এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ ব্যয় করতে বাধার সম্মুখীন হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েও যোগাযোগ করা হয়েছে। সার্বিকবিষয় পর্যালোচনা করেই বন্দর চেয়ারম্যানের পরামর্শে ৯টি ব্যাংকের সঙ্গে ইস্যু করা সকল প্রকার পে-অর্ডার, চেক, ব্যাংক গ্যারান্টি গ্রহণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এর আগে গত ১৬ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ঋণ বিতরণ কার্যক্রম সীমিত এবং এসব ব্যাংক থেকে ঋণপত্র (এলসি) খোলা নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে ন্যাশনাল ব্যাংকের ক্ষেত্রেও একই সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছিল।