নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা

ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, আসতে পারে বিকল্প উদ্যোগ

প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিনিধি

নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার কাজ প্রায় ৭৫ শতাংশ সম্পন্ন হলেও এটি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিকল্পনার কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ২০২৫ সালের জুলাই থেকে নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এটি তৈরির কাজটি এখন অনিশ্চয়তার মুখে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে বিদায়ী সরকারের নির্বাহী ইশতেহারের বাস্তবায়ন ও নীতির প্রতিফলনই এই পরিকল্পনায় প্রধান্য পাচ্ছিল, যা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) এই পরিকল্পনা তৈরির দায়িত্ব পালন করছে। তবে পরিকল্পনাটি স্থগিত হবে কি না বা এতে গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন আসবে কি না সে বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা জিইডির কাছে পৌঁছায়নি। জিইডির সদস্য (সচিব) ড. মো. কাউসার আহম্মদ জানিয়েছেন, পরিকল্পনাটি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তবে এটি বন্ধ হবে কি না বা কোনো বিকল্প উদ্যোগ নেয়া হবে, তা নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আসেনি। তবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের কাজ অব্যাহত রাখার নির্দেশনা রয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের সূত্র অনুযায়ী, যেহেতু নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা তৈরি করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার, এটি বন্ধ হয়ে যাওয়াটা শুধু সময়ের ব্যাপার। এ ছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অব্যাহত রাখবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলপত্র (পিআরএসপি) বা স্বল্প মেয়াদি এক বছরব্যাপী পরিকল্পনা গ্রহণের প্রস্তাব করা হতে পারে। সূত্র জানায়, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০২৪ সালের জুনে শেষ হবে। নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ ১১টি বিষয়কে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল, যার মধ্যে রয়েছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রাজস্ব আয় বাড়ানো, দক্ষতা উন্নয়ন, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ, এবং স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নীতি ও আদর্শ বিদায়ী সরকারের সঙ্গে একমত নয়, ফলে এই পরিকল্পনার ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। পরিকল্পনা তৈরিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ প্যানেলের প্রধান এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের কাছ থেকেও এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। ফলে পরিকল্পনা কমিশন কাজ আপাতত স্থগিত রেখেছে, কারণ পরামর্শকদের দিয়ে কাজ করালে সম্মানি দিতে হবে এবং পরিকল্পনা বাতিল হলে বিল পরিশোধে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার টেকনিক্যাল পেপার তৈরির কাজ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, এবং প্রায় ২৫-৩০টি ব্যাকগ্রাউন্ড পেপারের কাজ চলছে। তবে পরিকল্পনাটির ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত, এবং এর বিকল্প কী হতে পারে, তা পরিষ্কার নয়।