বাংলাদেশ ব্যাংক

সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে সহায়তা দেবে

প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিনিধি

দেশের ব্যাংক খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের ফলে ৮টি ব্যাংকে তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। এ সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে তারল্য সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো নতুন টাকা ছাপাবে না, বরং তারল্য উদ্বৃত্ত থাকা ব্যাংকগুলোকে সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে সহায়তা করতে বলা হয়েছে। গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। নতুন টাকা ছাপানো হবে না গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, নতুন টাকা ছাপানো দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপর আরো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি উল্লেখ করেন, আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে গেলে ২ লাখ কোটি টাকা ছাপানোর প্রয়োজন হবে, যা দেশের মুদ্রা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যাবে। এ জন্য তারল্য উদ্বৃত্ত থাকা ব্যাংকগুলোকে সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে সহায়তা করতে বলা হয়েছে, যেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গ্যারান্টারের ভূমিকা পালন করবে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ : গভর্নর আরো বলেন, দেশের বাইরে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা করছে। বিশেষত দুবাই, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোতে অর্থ পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এসব দেশের সহযোগিতায় পাচার হওয়া সম্পদ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় সহায়তার আশ্বাস পাওয়া গেছে। ব্যাংক সংস্কারের উদ্যোগ : ব্যাংক খাতের সংকট নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংক তিনটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে। এর মধ্যে একটি টাস্কফোর্স ব্যাংক খাত সংস্কারে কাজ করবে, যেখানে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ দেয়া হবে। আরেকটি টাস্কফোর্স কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা ও কার্যক্রমকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করবে। তৃতীয় টাস্কফোর্স হবে খারাপ সম্পদ উত্তোলনের জন্য, যা সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করবে। মূল্যস্ফীতি ও নীতি সুদহার : বর্তমানে দেশের মূল্যস্ফীতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলে জানান গভর্নর। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদহার বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছে। চলতি মাসের শেষের দিকে মুদ্রানীতির বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। তবে ব্যাংকারদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো যেন সুদের হার নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় না জড়ায়। ডলার বাজারে স্থিতিশীলতা : ডলার বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু নির্দেশনা জারি করেছে। ১২০ টাকার মধ্যে ডলার ক্রয়-বিক্রয় করতে ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ করা হয়েছে। ডলার দর আরো বাড়ানো প্রয়োজন হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে বলে উল্লেখ করেছেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এ সব উদ্যোগের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, দেশের ব্যাংক খাত ধীরে ধীরে সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াবে।