ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভারতীয় ঋণ সহায়তায় চলমান প্রকল্পগুলো অব্যাহত থাকবে

অর্থ উপদেষ্টা
ভারতীয় ঋণ সহায়তায় চলমান প্রকল্পগুলো অব্যাহত থাকবে

ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় চলমান প্রকল্পগুলো বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই প্রকল্পগুলো বন্ধ হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঢাকার সচিবালয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তিনি এসব কথা জানান। সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এলওসির আওতায় যেসব প্রকল্প চালু আছে, সেগুলো দেশের স্বার্থের কথা বিবেচনায় নিয়ে হাতে নেয়া হয়েছিল এবং এগুলো বন্ধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বরং উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থে আরো নতুন প্রকল্প গ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে।’ অর্থ উপদেষ্টা আরো উল্লেখ করেন যে, ভারত বাংলাদেশের বড় প্রতিবেশী দেশ এবং উভয় দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগের সুযোগ অনেক বেশি। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এলওসি চুক্তির ইতিহাস বেশ দীর্ঘ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুসারে, ২০১০ সালের আগস্ট মাসে প্রথম এলওসি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার আওতায় বাংলাদেশ ৮৬ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের অর্থায়ন পায়। এরপর ২০১৬ সালের মার্চ মাসে দ্বিতীয় এলওসি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার পরিমাণ ছিল ২০০ কোটি ডলার। তৃতীয় চুক্তিটি ২০১৭ সালের মার্চ মাসে হয়, যার পরিমাণ ছিল ৪৫০ কোটি ডলার। এই চুক্তিগুলো উভয় দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করেছে। বৈঠকে এলওসির আওতায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানিয়েছেন সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পগুলো দেশের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়িত হবে।’ বৈঠকে আরো আলোচনা হয়েছে কিভাবে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি করা যায়। ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাও নিশ্চিত করেন যে, এলওসির প্রকল্পগুলো অব্যাহত থাকবে এবং ভারত এই প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাই, এবং আজকের বৈঠক তার প্রমাণ।’ তিনি আরো বলেন যে, ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতা সবসময়ই অটুট থাকবে। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে আরো গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য বাংলাদেশ থেকে নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের এবং উভয় দেশই এই সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করতে কাজ করছে। বৈঠকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণায় ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে সহায়তা করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে এবং ভারতীয় পক্ষকেও আমরা সে কথা জানিয়েছি।’ তিনি আরো উল্লেখ করেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের অনেক ক্ষেত্র আছে যা ভবিষ্যতে আরো সম্প্রসারিত হতে পারে। প্রণয় ভার্মা বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এলওসির প্রকল্পগুলো খুবই বড় এবং এগুলো বন্ধ হবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাই, তা আজকের বৈঠকে স্পষ্ট হয়েছে। উভয় দেশের পারস্পরিক সম্মতিতে এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে।’ উভয় পক্ষই বিশ্বাস করে যে, এলওসির প্রকল্পগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এগুলো সময়মতো বাস্তবায়িত হলে দুই দেশের সম্পর্ক আরো মজবুত হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত