সাভারের আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চলে চলমান শ্রমিক অসন্তোষ ও বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার বেশ কিছু কারখানা বন্ধ রয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হলেও শ্রম আইন অনুযায়ী ২০টি কারখানা আজ বন্ধ এবং ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। শিল্প পুলিশ জানায়, সকালে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা নির্ধারিত সময়ে কাজে যোগ দিয়েছেন এবং কারখানাগুলোতে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ চলছে। তবে ১৮টি কারখানা শ্রম আইন অনুসারে বন্ধ রয়েছে এবং ২টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ তালিকায় ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য ও বেশ কিছু তৈরি পোশাক কারখানা অন্তর্ভুক্ত। শ্রম আইন অনুযায়ী বন্ধ থাকা কারখানাগুলোতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শন করছেন। সকাল থেকেই কাঠগড়া, জিরাবো, নরসিংহপুর ও জামগড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সড়কে টহল দিচ্ছেন।
জিরাবো এলাকায় একটি পোশাক কারখানার সামনে শ্রমিকদের জড়ো হতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে একজন নারী শ্রমিক জানান, তারা বেতন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করার পরদিনই কারখানা বন্ধ করে দেয়া হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা কারখানা খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি, এখানে কোনো ভাঙচুর বা বিশৃঙ্খলা হয়নি।’ এদিকে শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে কিছু কারখানার মালিকদের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিক নেতারা। বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন বলেন, মালিকদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। গতকাল বিজিএমইএ পরিস্থিতি নিরসনে একটি সভা করে। তবে এখনো কিছু কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম জানিয়েছেন, ১৮টি কারখানা শ্রম আইন অনুযায়ী বন্ধ রাখা হয়েছে এবং ২টি কারখানায় সাধারণ ছুটি দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ বন্ধ কারখানা তৈরি পোশাক শিল্পের। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং শ্রমণ্ডসংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক সবুর হোসেন আশুলিয়ার অনন্ত গ্রুপের কারখানা পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি কারখানার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং শ্রমিকদের দাবি-আপত্তি পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। বিজিএমইএ জানিয়েছে, আশুলিয়ায় মোট ২৭২টি কারখানার মধ্যে ৬টি কারখানা বন্ধ রয়েছে, ৪টি কারখানায় সবেতন ছুটি দেয়া হয়েছে এবং আরো ৬টি কারখানায় কাজ চলমান থাকলেও কাজ বন্ধ রয়েছে। আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধ করেছে ২৫৮টি কারখানা, তবে ১৪টি কারখানা এখনও বেতন দেয়নি। এদিকে, শ্রমিকদের অভিযোগ জানানোর জন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে এবং তাদের যে কোনো ধরনের আপত্তি বা দাবি হোয়াটসঅ্যাপ, ই-মেইল বা ডাকযোগে জানানো যাবে বলে শ্রম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।