ঢাকা ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

প্রবাসী আয়ের প্রবাহে স্বস্তি রিজার্ভের পতন থামানো গেছে

প্রবাসী আয়ের প্রবাহে স্বস্তি রিজার্ভের পতন থামানো গেছে

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে যে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বর্তমানে উন্নতির দিকে। প্রবাসী আয়ের বৃদ্ধি এবং রেমিট্যান্স প্রবাহের উন্নতির ফলে রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ৪৩০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ৪৩০ কোটি ডলার। তবে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ইচগ-৬ পদ্ধতিতে এই রিজার্ভের হিসাব করলে তা ২ হাজার কোটি ডলারের কাছাকাছি।’ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে রিজার্ভের এই উন্নতি একটি স্বস্তিদায়ক খবর হিসেবে এসেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পতনের যে প্রবণতা ছিল, তা এখন কিছুটা থেমেছে। বিশেষত প্রবাসী আয় এবং রেমিট্যান্সের প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় রিজার্ভের এই ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটি বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। রিজার্ভ বৃদ্ধির ফলে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বৈদেশিক লেনদেনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে। রেমিট্যান্সের বৃদ্ধি বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার অন্যতম প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে, তারল্য সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের কাছে সহায়তা চেয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ম্যাথিউ এ ভার্গিসের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের বাজেট সহায়তা এবং ব্যাংকিং খাতের তারল্য সংকট নিরসনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। তারা বাংলাদেশের বড় দাতাগোষ্ঠী, এবং চলতি বছর কিছু ঋণ সহায়তা দিতে তারা সম্মত হয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে বাকিটা সহায়তা প্রদান করা হবে।’ বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ সহায়তার বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলেও, বিষয়টির সফল বাস্তবায়নের জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্রে জানা গেছে, এই শর্তগুলো পূরণ করা হলে বাংলাদেশ ১০০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা পাবে। এর মধ্যে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার পলিসি বেসড লোন এবং বাকি ২৫০ মিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট লোন ও গ্যারান্টি ফ্যাসিলিটি হিসেবে প্রদান করা হবে। তবে ঋণ সহায়তা পেতে বাংলাদেশকে তিনটি প্রধান শর্ত মানতে হবে। প্রথমত, বেসরকারি খাতে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গঠন করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক মানদ-ে খেলাপি ঋণের নতুন সংজ্ঞায়ন করতে হবে। তৃতীয়ত, নতুনভাবে গঠিত টাস্কফোর্সের অডিট ফার্মের কার্যবিবরণী বিশ্বব্যাংকে উপস্থাপন করতে হবে। এই ঋণ সহায়তা বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ফেরাতে এবং সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষ করে তারল্য সংকট নিরসনে এই সহায়তা বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত