বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, খাতওয়ারি রপ্তানি পণ্যের আন্তর্জাতিক চাহিদা, রপ্তানি ও আমদানি গতিবিধি, সরবরাহ চেইন ব্যবস্থাপনা এবং গত অর্থবছরে অর্জিত রপ্তানি আয় বিবেচনায় নিয়ে নেতৃত্বস্থানীয় চেম্বার, ট্রেড এসোসিয়েশন এবং রপ্তানিকারকদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে চলতি অর্থ বছর অর্থাৎ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পণ্যখাতে রপ্তানির লক্ষমাত্রা ৫০.০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে বিগত বছরের তুলনায় ১২.৪% প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে।
অনুরূপভাবে, অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে ১৩.৬% প্রবৃদ্ধি নির্ধারণ করে সেবা খাতের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ৭.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা এর সভাপতিত্বে গত ০৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ব্যুরোর পর্ষদ সভায় রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে পর্ষদ কর্তৃক সর্বসম্মতক্রমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অর্জিত আয়কে ভিত্তি ধরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উল্লেখ্য যে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হতে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো কর্তৃক রপ্তানি সংক্রান্ত সংকলিত উপাত্ত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের রপ্তানি আয়ের মধ্যে বড় রকমের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর মধ্যে কয়েক দফা আলোচনার পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক সংশোধিত তথ্যের ভিত্তিতে বিগত দুই বছরের রপ্তানির (শিপমেন্ট) তথ্য সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে, উল্লিখিত চারটি সংস্থার ঐকমত্যের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর নির্দেশনানুযায়ী ঈচঈ (Customs Procedure Code) ব্যবহার করে ইপিবি ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রপ্তানি আয় সংশোধন করে। চিহ্নিত সমস্যাগুলো দূরীভূত করার পর ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় যথাক্রমে ৪৬.৬ বিলিয়ন এবং ৪৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রণিধানযোগ্য যে, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো রপ্তানি সংক্রান্ত Secondary data জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হতে সংগ্রহ ও সংকলন করে এবং অংশীজনদের উপযোগী করে তা শুধুমাত্র অংশীজনদের ব্যবহার উপযোগী করে তা প্রকাশ করে থাকে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো নিজে কোনো প্রাথমিক ডাটা/তথ্য তৈরি করে না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হতে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো কর্তৃক রপ্তানি সংক্রান্ত সংকলিত উপাত্ত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের রপ্তানি আয়ের মধ্যে বড় রকমের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো অন্য দুটি সরকারী সংস্থা- জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং বাংলাদেশ ব্যাংক-এর সঙ্গে বেশ কয়েকটি সভা করে উপাত্তের তারতম্যের কারণ অনুসন্ধান করতে সক্ষম হয়। একই exp এবং commodity code (HS code)-এর multiple entry সন্নিবেশিত থাকা, CMT (cutting, making and trimming)-এর ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সধশরহম charge -এর পরিবর্তে কাপড়সহ সমস্ত accessories -এর দাম হিসাবায়ন, sample item যার কোনো রপ্তানি মূল্য না থাকা সত্ত্বে ও রপ্তানি হিসাবে অন্তর্ভুক্তকরণ, ঊচত থেকে দেশের অভ্যন্তরে বিক্রয়কে রপ্তানি হিসাবে এবং রপ্তানি পুনরায় বিদেশে রপ্তানির সময় রপ্তানি হিসাবে আবার হিসাবায়ন ইত্যাদি এ পার্থক্যের মূল কারণ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো নিজে কোনো প্রাথমিক ডাটা/তথ্য তৈরি করে না।
রপ্তানি সংক্রান্ত Secondary data জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হতে সংগ্রহ পূর্বক শুধুমাত্র অংশীজনদের ব্যবহার উপযোগী করে তা প্রকাশ করে থাকে। মনে রাখা প্রয়োজন যে, বাংলাদেশ ব্যাংক Realised export earnings data এবং ইপিবি কর্তৃক জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর Assesed data ব্যবহার করে বিধায় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সংকলিত রপ্তানি আয় অপেক্ষা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো কর্তৃক সংকলিত রপ্তানি আয় বেশি হয়।
সহায়ক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভোক্তা চাহিদা বজায় থাকলে, নির্বিঘ্ন সরবরাহ চেইন, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হলে এবং সময়োপযোগী নীতিগত সহায়তা অব্যাহত রাখা হলে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে সব অংশীজন মনে করে। আশা করা যায়, বর্তমান সরকারের গতিশীল নেতৃত্বে এবং সব অংশীজনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় রপ্তানিকারকরা এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবেন।