বাণিজ্য মেলা শুরু হবে ১ জানুয়ারি
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
মাসব্যাপী ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ) ২০২৫ শুরু হবে আগামী ১ জানুয়ারি। এবারও রাজধানীর পূর্বাচলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) দেশে পণ্য প্রদর্শনীর সবচেয়ে বড় এই মেলা হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের সম্মানে এ বছর মেলা প্রাঙ্গণে তৈরি করা হবে মুগ্ধ কর্নারের ন্যায় স্থাপনা এবং প্রদর্শিত হবে বিভিন্ন স্থিরচিত্র। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবি যৌথ উদ্যোগে এ মেলা আয়োজন করে থাকে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত ইপিবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ডিআইটিএফ ২০২৫ এর স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বাণিজ্য মেলা স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান মোহা. সেলিম উদ্দিন। এতে বাণিজ্য মেলাসংক্রান্ত কার্যপত্র উপস্থাপন করেন ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন। বাণিজ্য মেলার বিভিন্ন প্রশাসনিক ও আর্থিক নীতিনির্ধারণ, বিভিন্ন উপকমিটি গঠন, বিভিন্ন ধরনের স্টল, প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ ও মেলার প্রবেশ টিকিটসহ অন্যান্য ইজারা কাজের ফ্লোর মূল্য নির্ধারণের লক্ষ্যে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ইপিবি জানিয়েছে, মেলার সার্বিক নিরাপত্তা ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে মেলা প্রাঙ্গণে পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও র্যাবের সদস্য থাকবেন। মেলা পরিচালনার জন্য মেলা সচিবালয়ের পাশাপাশি নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা কমিটিসহ ১১টি কমিটি কাজ করবে।
যাদের স্টল থাকবে : রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর কর্মকর্তারা বলেন, মেলায় স্টল বরাদ্দের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। বাণিজ্যিক স্টলের পাশাপাশি নারী, প্রতিবন্ধী, সুবিধাবঞ্চিত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, কুটিরশিল্প, তাঁতশিল্প, বস্ত্রশিল্প ও হস্তশিল্পের জন্য কিছুসংখ্যক স্টল সংরক্ষিত থাকবে। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, জনকল্যাণমূলক সমিতি, মহিলা উদ্যোক্তা ও সমিতির জন্য সংরক্ষিত স্টল থাকবে। মেলায় সম্ভাবনাময় খাত বা পণ্যভিত্তিক সেমিনার আয়োজন করা হবে। রপ্তানি নীতিতে ঘোষিত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত ও বিশেষ উন্নয়নমূলক খাতের জন্য থাকবে পৃথক প্রদর্শনীর ব্যবস্থা। পণ্যের প্রসার ও বিপণনের জন্য মেলায় থাকবে উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। বিদেশি উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে আকৃষ্ট করতে থাকবে স্বতন্ত্র সোর্সিং কর্নার। তারুণ্যের শক্তি ও উদ্ভাবনী উদ্যোগ উৎসাহিত করতে মেলায় থাকবে বিভিন্ন আয়োজন। এ ছাড়া বয়সভিত্তিক দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে নির্মাণ করা হবে প্রযুক্তি কর্নার, শিশুদের জন্য প্রযুক্তিভিত্তিক দুটি শিশু পার্ক ও বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য সিটিং কর্নার থাকবে। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ব্যাংকিং সুবিধা দিতে মেলায় থাকবে পর্যাপ্তসংখ্যক ব্যাংক বুথ।
মা ও শিশুদের কথা বিবেচনা করে মেলায় স্থাপন করা হবে দুটি মা ও শিশুকেন্দ্র; থাকবে মসজিদ, নিউট্রিশন অ্যান্ড অটিজম সেবা ও দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য আরামদায়ক ও শোভন চেয়ার প্রভৃতি। আসছে মেলায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে বলে জানিয়েছে ইপিবি। এ ছাড়া মেলায় খাদ্যদ্রব্যের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রতিদিন ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করবেন। মেলায় আগত ব্যক্তিদের গাড়ি রাখার জন্য পার্কিংয়ের পর্যাপ্ত সুবিধা রাখা হবে বলে জানিয়েছে ইপিবি। সংস্থাটি জানায়, প্রায় পাঁচ শতাধিক গাড়ি পার্কিং সুবিধাসহ দ্বিতল কার পার্কিং ভবন আছে সেখানে। এ ছাড়া এক্সিবিশন হলের বাইরে ছয় একর জায়গায় বড় পার্কিং ব্যবস্থা থাকবে। দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত বিআরটিসি ও কয়েকটি যাত্রীবাহী বাস চলাচল করবে। মেলা চলাকালীন এ বাস সেবা চালু থাকবে। উল্লেখ্য, দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন ও উৎপাদনে সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা হচ্ছে।