ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চাহিদা বেড়েছে মিয়ানমারের পেঁয়াজ, বাড়ছে সরবরাহ

চাহিদা বেড়েছে মিয়ানমারের পেঁয়াজ, বাড়ছে সরবরাহ

মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে বিদ্রোহীদের সঙ্গে জান্তা সেনাদের সংঘর্ষের জেরে গত কয়েক বছর ধরে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। সমুদ্রপথে মিয়ানমার থেকে পণ্য আমদানিতে খরচ বেশি হওয়ায় গত দুই বছর ধরে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়েও খুব একটা আমদানি হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি দেশের বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন মিয়ানমার থেকে আবারো পেঁয়াজ আমদানি বেড়েছে। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানিতে যেখানে প্রতি কেজিতে খরচ পড়ছে ৯০ টাকা। সেখানে মিয়ানমার থেকে সমুদ্রপথে পেঁয়াজ আমদানিতে খরচ পড়ছে ৮৫ টাকার মতো। তাই ব্যবসায়ীদের অনেকে এখন মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে ঝুঁকছেন। খাতুনগঞ্জের একে ট্রেডার্সের মালিক আনোয়ার হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘খাতুনগঞ্জে এখন মিয়ানমারের পেঁয়াজের সরবরাহ আগের চেয়ে বেড়েছে। ভারতীয় পেঁয়াজের তুলনায় মিয়ানমারের পেঁয়াজের দাম কিছুটা কম। অন্যদিকে কোয়ালিটির দিক দিয়ে মিয়ানমারের পেঁয়াজ দেশি পেঁয়াজের মতো। দামে কম হওয়ায় বাজারে এখন মিয়ানমারের পেঁয়াজের চাহিদা বাড়ছে। তাই মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানিও বাড়ছে। দেশি এবং ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৯০ টাকার বেশি থাকলে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি বাড়বে।’ খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাস দুয়েক আগেও যেখানে বাজারে মিয়ানমারের পেঁয়াজ খুঁজে পাওয়া যেত না সেখানে অধিকাংশ আড়তে দেখা মিলছে মিয়ানমারের পেঁয়াজ। শুধু মিয়ানমারের পেঁয়াজ নয়, বাজারে এখন চীন, ভারত, পাকিস্তান, মিশর এবং থাইল্যান্ডের পেঁয়াজও বেচাকেনা হচ্ছে। এসব পেঁয়াজের মধ্যে কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে পাকিস্তানের পেঁয়াজ। খাতুনগঞ্জে পাইকারিতে প্রতি কেজি পাকিস্তানি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮২ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৬ থেকে ৯৮ টাকায়। এছাড়া দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ৯৬ টাকায়। মিয়ানমারের পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০ টাকায়। উদ্ভিদ সংঘ নিরোধ চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই এবং আগস্ট মাসে চীন, পাকিস্তান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড মিশর থেকে মোট ৬ হাজার ৭৭১ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে পাকিস্তান থেকে। গত দুই মাসে ওই দেশে থেকে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ৪ হাজার ৬০৬ টন। এরপরে রয়েছে মিশর, মিশর থেকে গত দুই মাসে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ১ হাজার ২৮৩ টন। এ ছাড়া চীন থেকে আমদানি হয়েছে ৬৮১ টন, মিয়ানমার থেকে ১৯৬ টন এবং থাইল্যান্ড থেকে আমদানি হয়েছে ৫ টন। পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে জানতে চাইলে উদ্ভিদ সংঘ নিরোধ চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ শাহ আলম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেলে তখন ব্যবসায়ীরা বিকল্প দেশগুলো থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেন। বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় গত দুই মাসে এসব দেশে থেকে পেঁয়াজ আমদানি বেড়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে এখন মিয়ানমারের পেঁয়াজ আসছে বেশি।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত