ভারত প্রায় এক বছর পর সিদ্ধ চাল রপ্তানিতে দেয়া নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। গত শুক্রবার দেশটির সরকার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। পাশাপাশি রপ্তানি শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। গত বছরের জুলাই মাসে ভারতে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ায় ধান উৎপাদন হ্রাস পায়। অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সরকার সিদ্ধ চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ভারতের জাতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য ছিল দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল রাখা। তবে প্রায় এক বছর পর ভারত আবারও রপ্তানির সুযোগ উন্মুক্ত করায় রপ্তানিকারকদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। রাইস ভিলার প্রধান নির্বাহী সুরজ আগরওয়াল এই সিদ্ধান্তকে কৃষি খাতের জন্য একটি বড় পরিবর্তন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত রপ্তানিকারকদের আয় বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত ফসলের জন্য আরও ভালো মূল্য পাবেন।’ আগরওয়াল আরও বলেন, খরিফ শস্য (বর্ষাকালীন ফসল) বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে এই সিদ্ধান্তের ফলে কৃষকরা সরাসরি লাভবান হবেন। কারণ তারা চালের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে ভালো দাম পেতে শুরু করবেন। চাল রপ্তানির তদারকি ও বাজারের উন্নতি : গত বছরের জুলাইয়ে ভারত সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে গঠিত রাইস ফেডারেশন কনসালটিং কমিটি চাল রপ্তানির বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদারকি করছে। এ ছাড়া, সম্প্রতি সরকার বাসমতি চালের ফ্লোর প্রাইস বা ন্যূনতম রপ্তানি মূল্যও তুলে নিয়েছে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত ইউরোপ, আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে চাল রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়াতে সহায়তা করবে। মূল্যস্ফীতি ও খাদ্যপণ্যের মূল্য : ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস আগেই সতর্ক করেছিলেন, খাদ্যপণ্যের ওপর নিবিড় নজরদারি না থাকলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে। অগাস্টে দেশটির মূল্যস্ফীতি ৩.৬৫ শতাংশে পৌঁছায়, যা বাজার পরিস্থিতির জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তাই চাল রপ্তানি বিষয়ে নেওয়া নতুন সিদ্ধান্তে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। সিদ্ধ চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের মাধ্যমে ভারতীয় কৃষক ও রপ্তানিকারকদের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।