পুঁজিবাজারে বড় পতন : এক সপ্তাহের বাজার
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিদায়ী সপ্তাহে গত ২২ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের পুঁজিবাজারে সূচক এবং বাজার মূলধনের বড় ধরনের পতন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)-এর উভয় বাজারেই টাকার পরিমাণে লেনদেন কমেছে। এ সময়ের মধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স, ডিএসই-৩০ এবং ডিএসই শরিয়াহ সূচকেরও উল্লেখযোগ্য পতন ঘটে। ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে প্রায় ১৩ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা এবং সিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১২ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক এবং লেনদেনের পর্যালোচনা : সপ্তাহের শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৭৬.৫৫ পয়েন্ট বা ৩.১৩ শতাংশ কমে ৫ হাজার ৪৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসই-৩০ সূচক ৭৪.০৮ পয়েন্ট বা ৩.৫৯ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৯০ পয়েন্টে নেমে আসে, এবং ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৪০.৬৭ পয়েন্ট বা ৩.২২ শতাংশ কমে ১ হাজার ২২১ পয়েন্টে পৌঁছেছে। এ ছাড়াও, ডিএসএমইএক্স সূচক ৫৮.৩৩ পয়েন্ট বা ৪.৭৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ১৭২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বাজার মূলধনের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের পতন দেখা যায়। বিদায়ী সপ্তাহের শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ১১৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, যেখানে আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এই মূলধন ছিল ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৬২১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এই হিসাবে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১৩ হাজার ৫০৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। লেনদেনের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে। বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১৩১ কোটি ৯ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহের ৩ হাজার ৩৯৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকার তুলনায় ১ হাজার ২৬৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা কম। এই সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৫৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, ৩৩১টির দাম কমেছে, এবং ১৭টির শেয়ারদর অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে ১৭টি কোম্পানির কোনো লেনদেন হয়নি। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের পরিস্থিতি : অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে বড় ধরনের পতন হয়েছে। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫২১.৪৫ পয়েন্ট বা ৩.৩০ শতাংশ কমে ১৫ হাজার ৭৭১ পয়েন্টে নেমে এসেছে। সিএসই-৩০ সূচক ২.৮৫ শতাংশ কমে ১২ হাজার ৪৫৭ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স সূচক ৩.০৯ শতাংশ কমে ৯ হাজার ২৫৭ পয়েন্টে, এবং সিএসআই সূচক ৩.৪১ শতাংশ কমে ৯৯১ পয়েন্টে পৌঁছেছে। এ ছাড়াও, এসইএসএমইএক্স সূচক ৩.৯৪ শতাংশ কমে ২ হাজার ৫৭৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইর বাজার মূলধনেও পতন লক্ষ্য করা গেছে। বিদায়ী সপ্তাহের শেষে সিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮ হাজার ৪৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা, যেখানে আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এই মূলধন ছিল ৭ লাখ ২০ হাজার ৩৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১২ হাজার ১০৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। লেনদেনের দিক থেকেও সিএসইতে বিদায়ী সপ্তাহে পতন ঘটেছে। এই সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছে ৪১ কোটি ১৩ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহের ৭২ কোটি ৬০ লাখ টাকার তুলনায় ৩১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা কম। বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩১৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৫২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, ২৫২টির দাম কমেছে, এবং ১০টি শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সপ্তাহের সার্বিক চিত্র : বিদায়ী সপ্তাহে দেশের পুঁজিবাজারে সূচকের পতনের পাশাপাশি বাজার মূলধন এবং লেনদেনে উল্লেখযোগ্য হ্রাস দেখা দিয়েছে। উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চাপ ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। বাজারে ক্রয়চাপ কম এবং বিক্রয়চাপ বেশি হওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।