ব্যক্তি পর্যায়ের করদাতাদের জন্য আয়কর রিটার্ন দাখিলের নির্ধারিত সময়সীমা ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর। কোম্পানির জন্য এটি ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। ২০২০ সালের পর থেকে আয়কর মেলা বন্ধ থাকলেও, এনবিআর সীমিত আকারে আয়কর সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। তবুও নির্ধারিত সময়ে অনেক করদাতা নানা কারণে রিটার্ন জমা দিতে পারেন না। সেক্ষেত্রে কীভাবে সময় বাড়ানো যায় এবং সময়মতো রিটার্ন জমা না দিলে কী ধরনের জরিমানা আরোপ হতে পারে, তা নিয়েই নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
আয়কর আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত সময় পার হলে উপযুক্ত কারণ উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে আবেদন করা যায়। উপকর কমিশনার নিজ ক্ষমতাবলে দুই মাস সময় বাড়াতে পারেন, আর এর চেয়ে বেশি সময়ের জন্য যুগ্ম কর কমিশনারের অনুমোদন প্রয়োজন। তবে যারা সময়মতো আবেদন করবেন না বা আবেদন করেও সময় বাড়াতে সক্ষম হবেন না, তাদের জরিমানাসহ কর পরিশোধ করতে হবে। যদি কোনো ব্যক্তি রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ হন, তবে তার সর্বশেষ নির্ধারিত আয়ের ওপর ১০ শতাংশ হারে জরিমানা আরোপ করা হতে পারে, যা ন্যূনতম ১,০০০ টাকা হবে। নির্ধারিত সময়ের পরেও যদি করদাতা করসহ জরিমানা না দেন, প্রতিদিন ৫০ টাকা হারে অতিরিক্ত জরিমানা আরোপ করা হবে।
যদি তার ওপর পূর্বে কর নির্ধারণ না করা হয়ে থাকে, তবে জরিমানা ৫,০০০ টাকার বেশি হবে না। রিটার্ন দাখিল করলেও বেআইনি কোনো কাজ করলে জরিমানা হতে পারে। যেমন, ভুল বা জাল টিআইএন ব্যবহার করলে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
এ ছাড়া আয়ের তথ্য গোপন করা হলে বিভিন্ন হারে জরিমানা আরোপের বিধান রয়েছে। কোনো নোটিশ অমান্য করা হলেও জরিমানা হতে পারে, তবে তা মোট আয়ের করের চেয়ে বেশি হবে না। করদাতা যদি কোনো আদেশের বিরুদ্ধে আপত্তি করতে চান, তাহলে তিনি আপিল করতে পারবেন।
আপিল কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত পদ্ধতিতে শুনানি শেষে ৩০ দিনের মধ্যে আদেশ জারি করবেন। এ ছাড়া, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর সম্পর্কিত বিরোধ সমাধান করা যাবে, তবে রিট করা বিরোধ এডিআরের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা যাবে না।