বিশ্ববাজারে দাম কমছে

ভারত চাল রপ্তানির বিধিনিষেধ প্রত্যাহার

প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারত সম্প্রতি আধাসেদ্ধ চাল রপ্তানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করায় বিশ্ববাজারে চালের দাম কমছে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকায় চালের দাম হ্রাস পাচ্ছে, যা খাদ্যের মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে সহায়তা করছে। ভারত বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ এবং তাদের এ সিদ্ধান্তের ইতিবাচক প্রভাব আন্তর্জাতিক বাজারে দৃশ্যমান হচ্ছে। নিক্কেই এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের চাল রপ্তানির গড় মূল্য গত সপ্তাহে টনপ্রতি ৫২৯ ডলারে নেমে এসেছে, যা আগের মাসের তুলনায় ৮ শতাংশ কম। চলতি বছরের জানুয়ারিতে থাইল্যান্ডের চালের রপ্তানিমূল্য ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছিল, কিন্তু এখন তা ২১ শতাংশ কমেছে। ভারতেও ৫ শতাংশ খুদযুক্ত সেদ্ধ চালের দাম গত সপ্তাহে টনপ্রতি ৪৫০ থেকে ৪৮৪ ডলার ছিল, যা গত বছরের আগস্টের পর সর্বনিম্ন। একই সাথে ভারতের ৫ শতাংশ খুদযুক্ত সাদা চালের দাম আগের সপ্তাহে ৪৬০ থেকে ৪৯০ ডলার ছিল। ভিয়েতনাম ফুড অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যানুযায়ী, ভিয়েতনামে গত সপ্তাহে চালের দাম গত বছরের জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। গত বৃহস্পতিবার দেশটিতে ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চাল টনপ্রতি ৫৩২ ডলারে বেচাকেনা হয়েছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৫৩৭ ডলার। ২০২২ সালে সারা বিশ্বে যত চাল রপ্তানি হয়েছিল, তার ৪০ শতাংশই করেছে ভারত। ওই বছরে বিশ্ব রপ্তানি বাজারে ৫ কোটি ৫৪ লাখ টন চাল বেচাকেনা হয়েছিল, যার মধ্যে ভারতের চাল ছিল ২ কোটি ২২ লাখ টন। চালের আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের পরবর্তী চারটি প্রতিযোগী দেশ হলো থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান এবং যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩ সালে এই চার দেশ সম্মিলিতভাবে যত চাল রপ্তানি করেছে, ভারত একাই তার চেয়ে বেশি রপ্তানি করেছে। ভারত ১৪০টি দেশে চাল রপ্তানি করে, ফলে তাদের রপ্তানির সিদ্ধান্ত বিশ্ববাজারে চালের দামে বড় প্রভাব ফেলে। ২০২৩ সালে ভারত চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করলে বিশ্ববাজারে চালের দাম বৃদ্ধি পায়। তারা চাল রপ্তানিতে নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করায় এশিয়া ও আফ্রিকার ক্রেতারা থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও মিয়ানমারে ছোটেন। এ কারণে এসব দেশে চালের রপ্তানির মূল্য গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যায়। রপ্তানিকারক দেশের প্রতিযোগিতামূলক দামের কারণে ভিয়েতনামে চালের দাম কমেছে। এ ছাড়া, গত বুধবার ইন্দোনেশিয়ার বুলোগ চাল ক্রয়ের টেন্ডার বাতিল করেছে, যার প্রভাবও চালের দামে পড়েছে। এদিকে, থাইল্যান্ডে গত সপ্তাহে ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম ছিল টনপ্রতি ৫১০ ডলার, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৫২৫ ডলার। ব্যাংককভিত্তিক এক ব্যবসায়ী জানান, থাইল্যান্ডের চালের চাহিদা স্থিতিশীল; সরবরাহের জন্য চাল এরই মধ্যে জমি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ শিথিল করছে ভারত, ফলে গত মাসের শেষের দিকে থেকে বিশ্ববাজারে চালের দাম কমছে। এই ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে, যা খাদ্যের মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে সহায়ক হচ্ছে।