অ্যাপলকে পিছনে ফেলে আবারো বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানির তকমা পেয়েছে এনভিডিয়া। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গত শুক্রবার তারা এই স্বীকৃতি অর্জন করে। তবে, এটি ছিল একটি সাময়িক অর্জন। এনভিডিয়ার চিপের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। গতকাল কিছু সময়ের জন্য এনভিডিয়ার বাজার মূলধন ৩ দশমিক ৫৩ ট্রিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ ৩ লাখ ৫৩ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত হয়। এই সময়ে অ্যাপলের বাজার মূলধন ছিল ৩ দশমিক ৫২ ট্রিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ ৩ লাখ ৫২ হাজার কোটি ডলার। তবে, পরে শেয়ার দাম কমে যাওয়ায় এনভিডিয়ার বাজার মূলধন ৩ দশমিক ৪৭ ট্রিলিয়ন ডলারে নেমে আসে, সেই সঙ্গে অ্যাপলের বাজার মূলধন ৩ দশমিক ৫২ ট্রিলিয়ন ডলারে রয়েছে। গত মঙ্গলবার এনভিডিয়ার শেয়ার মূল্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। প্রসেসরের বাজারে প্রবৃদ্ধির কারণে তাইওয়ানের চিপ কোম্পানি টিএমএসসির মুনাফা ৫৪ শতাংশ বেড়ে যাওয়াও এনভিডিয়ার শেয়ার বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে, অ্যাপলের স্মার্টফোনের চাহিদায় কিছুটা অবনতি দেখা গেছে। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে চীনে আইফোনের বিক্রি ০.৩ শতাংশ কমেছে, অথচ একই সময়ে অ্যাপলের প্রতিদ্বন্দ্বী হুয়াওয়ের ফোন বিক্রি ৪২ শতাংশ বেড়েছে। তবে, অ্যাপল এখনো বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানি হিসাবে টিকে রয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসেও এনভিডিয়া স্বল্প সময়ের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানি হয়ে ওঠে, এরপর সেই অবস্থানটি মাইক্রোসফট ও অ্যাপলের কাছে চলে যায়। বর্তমানে, এই তিন কোম্পানির মধ্যে প্রতিযোগিতা চলমান রয়েছে। মাইক্রোসফটের বাজার মূলধন কিছুটা কমে গেছে, ফলে এনভিডিয়া ও অ্যাপলের মধ্যে ব্যবধান বেড়েছে। গতকাল মাইক্রোসফটের শেয়ারের দাম ০.৮ শতাংশ বেড়ে বাজার মূলধন ৩ দশমিক ১৮ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় প্রসেসরের মূল সরবরাহকারী এনভিডিয়া। মাইক্রোসফট, মেটা ও অ্যালফাবেটের মতো প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো এআই ভিত্তিক কম্পিউটিং সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কাজ করছে, এবং এ ক্ষেত্রে এনভিডিয়ার প্রসেসর ব্যবহৃত হচ্ছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এনভিডিয়ার প্রসেসরের মান অন্যান্য কোম্পানির তুলনায় ভালো, যার কারণে তারা প্রসেসর সরবরাহ করতে সক্ষম হচ্ছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এনভিডিয়ার বাজার মূলধন দুই লাখ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল। এক লাখ কোটি ডলার থেকে দুই লাখ কোটি ডলারে পৌঁছাতে তাদের সময় লেগেছে মাত্র নয় মাস। পরবর্তী সময়ে তিন ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে সময় লেগেছে তিন মাসেরও কম। বর্তমানে, এনভিডিয়ার বাজার মূলধন ৩ দশমিক ৫ লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ১৯৯০-এর দশকে যাত্রা শুরু করা এনভিডিয়া একসময় ভিডিও গেমের প্রসেসর তৈরি করত। চলতি মাসেই কোম্পানিটির শেয়ার ১৮ শতাংশ বেড়ে যায়।¤ম্প্রতি ওপেন এআই, যা চ্যাটজিপিটি পরিচালনা করে, এনভিডিয়ায় ৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়ার পর কোম্পানিটির শেয়ারের দাম আবারো বৃদ্ধি পায়। এই উন্নয়নের ফলে এনভিডিয়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে শক্তিশালী অবস্থান তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে এবং তাদের ভবিষ্যৎ আরো উজ্জ্বল হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।